বছর ঘুরে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী ৮ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে এই দুর্গোৎসব। সারা দেশের মতো বাউফলেও চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা পালনের প্রস্তুতি। পটুয়াখালী জেলায় সর্বাধিক পূজা হচ্ছে বাউফলে। এবছর বাউফলে ৬৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। শেষমুহূর্তে বাউফলের বিভিন্ন মণ্ডপে চলছে শিল্পীর রংতুলির শেষ আঁচর। শুরু হয়েছে আলোকসজ্জার কাজ। 

নির্বিঘ্নে ও উৎসাহ উদ্দীপনায় যাতে দুর্গোৎসব উদযাপিত হতে পারে সেজন্য ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, জেলা সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ ও উপজেলা সেনাবাহিনী প্রতিটি পূজা কমিটির সাথে মতবিনিময় করে পূজায় সার্বিক নিরাপত্তা বিধান করা হবে বলে আশস্ত করেছেন। পূজার নিরাপত্তায় আনসার-ভিডিপি, পুলিশ, র‍্যাব, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ড মোতায়েন থাকবে বলে একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে। 

বাউফল উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সনজিত কুমার সাহা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি প্রতিটি পূজা মণ্ডপে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। পালা করে তারা পূজামণ্ডপ পাহারা দেবেন। সরকারের কাছে আমাদের দাবি ছিল ৫ দিনের পূজায় অন্তত ২ দিন ছুটি দেবে। কিন্তু সেটা পাওয়া গেল না। পূজার সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক অতুল চন্দ্র পাল জানান, বাউফল একটি শিক্ষিত-নন্দিত অসাম্প্রদায়িক চেতনার জনপদ। পূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা কথা বলেছেন। এবছর ৫৬টি মণ্ডপে প্রতিমা দিয়ে পূজা হবে এবং ৯টি মণ্ডপে ঘটপূজা করা হবে। বাউফলের প্রতিটি পূজামণ্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। সরকারের দেওয়া নিরাপত্তা বাহিনী ছাড়াও প্রতিটি মণ্ডপের পূজা কমিটি সার্বিক বিষয়ে নজরদারি করবে। 

তিনি বলেন, আমাদের ধারণা ছিল পরিবর্তনের আবহে প্রতিটি পূজায় ১ টন করে চাল বরাদ্দ করবেন। কিন্তু সরকারি বরাদ্দ ৫০০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। তবে আগামীতে সরকারি বরাদ্দ উন্নীত হবে বলে আসা করছি।

বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন জানান, পূজা শুরুর পূর্বেই সকল পূজামণ্ডপ পুলিশ টহলের আওতায় আনা হয়েছে। সাদা পোশাকেও নজরদারি করা হচ্ছে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বশির গাজী বলেন, পূজার উৎসবে যেকোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা শক্ত হাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করবেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম থাকবে। পূজার সময় সেনাবাহিনীর টহল দল মাঠে থাকবেন। পূজাকে কেন্দ্র করে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। আসা করছি আনন্দঘন পরিবেশেই দুর্গোৎসব উদযাপন হবে।

আরিফুল ইসলাম সাগর/পিএইচ