গত কয়েক বছর ধরে বাগেরহাটের সদর উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের লিটন শিকদারের বাড়িতে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ব্যাপক আয়োজন হতো। এ মণ্ডপ ঘিরে পূজার ৫ দিন বিপুল পরিমাণ ভক্তদের আনাগোনা হতো সেখানে। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার ছোট পরিসরে পূজার আয়োজন করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে গিয়ে দেখা যায়, সুনসান নীরবতা পুরা এলাকায়। মন্দিরের গেটটি তালাবন্ধ। আশেপাশের সবকিছুই যেন স্তব্ধ। উপমহাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রতিমায় দুর্গা পূজার আয়োজন করা এ মন্দিরে কেন এ বছর পূজা হচ্ছে না তা জানার জন্য লিটন শিকদারের বাড়িতে গেলে বাড়ির সদস্যরা কথা বলতে রাজি হননি। 

ফিরে আসার সময় রাস্তায় মন্দিরের সামনে দেখা মিলল আয়োজক লিটন শিকদারের আত্মীয় গৌরব শিকদারের সঙ্গে। এবারের পূজা উদযাপনের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, দেশ ও দেশের বাইরে আলোচনায় ছিল শিকদার বাড়ির সবচেয়ে বড় এ মণ্ডপটি। প্রতিবছরই পূজার আগে প্রায় ছয় মাস ধরে চলে প্রতিমা তৈরির কাজ। এবারের পূজার জন্যও শিকদার বাড়িতে বেশ কয়েকজন কারিগর প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন। তৈরিও করা হয়েছিল কিছু প্রতিমা। কিন্তু প্রধান ভাস্কর অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় প্রথমে কাজ স্থগিত করা হয়েছিল। এরপর তাকে ভারতে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সেই থেকেই মন্দিরটি তালাবন্ধ রয়েছে। এবার আর আগের মতো সেই আয়োজন থাকছে না। ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিকভাবে পূজার ছোটখাটো আয়োজন করা হবে।

শিকদার বাড়ি দুর্গোৎসবের আয়োজক লিটন শিকদার বলেন, ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে অনেকের প্রাণহানি ঘটেছে। একদিকে শোক চলছে অন্যদিকে আনন্দ হবে আমি এটা মেনে নিতে পারিনি। এজন্যই এবার পূজোর আয়োজন রাখা হয়নি। তবে পারিবারিকভাবে ছোট পরিসরে পূজো করা হবে।

জানা গেছে, সর্বপ্রথম ২০১১ সালে ২৫১টি প্রতিমা নিয়ে প্রথম দুর্গাপূজার জমকালো আয়োজন শুরু হয় শিকদার বাড়ি দুর্গা মন্দিরে। সেই থেকে প্রতিবছর ধুমধামে পূজা হয়ে আসছে এই বাড়ির মন্দিরটিতে। ২০১৯ সালেও ৮০১টি প্রতিমা নিয়ে এই বাড়িতে পূজা উদযাপন করা হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে ২০২০ সালে শিকদার বাড়িতে খুবই সীমিত পরিসরে পূজার আয়োজন করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালে ৫০১টি প্রতিমা তৈরি করে দুর্গোৎসব করা হয় এখানে। প্রতিবছর দুর্গোৎসবে দেশ-বিদেশের অসংখ্য দর্শনার্থীদের সমাগম হয় এ মন্দিরে।

শেখ আবু তালেব/এসকেডি