আন্দোলনে যাওয়া শিক্ষার্থীদের মোবাইল তল্লাশি, মারধর, হামলা, গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোটভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সারওয়ারসহ ৯৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

বুধবার (২ অক্টোবর) রাতে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মো. এমরান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রহিমকে। মামলায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু, নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ, সদর দক্ষিণ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন অপু, সাধারণ সম্পাদক তুহিনসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। 

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাতে সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

মামলায় অভিযোগ করা হয়, সরকার পতনের আগেরদিন গত ৪ আগস্ট দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায়। ওই কর্মসূচিতে যোগদানের সময় সাবেক অর্থমন্ত্রীর ভাইয়ের নির্দেশে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতারা বেলতলী মনিপুর এলাকা এবং চাঙ্গিনি দক্ষিণ মোড়ে অবস্থান নেন।

এ সময় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মহাসড়কের দিকে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পথরোধ করে তাদের মোবাইল ফোন তল্লাশি করেন। পরে আন্দোলনে যাওয়ার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। শিক্ষার্থীরা সেসব বাধা ডিঙিয়ে যখন একত্রিত হয়ে কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন, সেসময় অভিযুক্তরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। ওই হামলায় বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহত হন। 

মামলার প্রধান আসামি সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ভাইসহ বেশিরভাগ অভিযুক্ত আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। বেশিরভাগ আসামি আত্মগোপনে রয়েছেন। আমরা তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

আরিফ আজগর/এমএ