পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার তন্মী আক্তার অনলাইনে ফার্নিচার কিনতে ৩০ হাজার টাকা দেন ‘ইত্যাদি ফার্নিচার মৌলভীবাজার’ নামে একটি ফেসবুক পেজের কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু ফার্নিচার হাতে না পেয়ে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। পরে তিনি পুলিশের দারস্থ হন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় উদ্ধার করে দেন সেই টাকা।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ সময় পুলিশ সুপার সকলকে প্রতারকদের থেকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন।

ভুক্তভোগী তন্মী আক্তার উপজেলার উদায়ভারা বুড়ির চর গ্রামের মো. ফজলুল হকের মেয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে 'ইত্যাদি ফার্নিচার মৌলভীবাজার' পেজে ফার্নিচারের লোভনীয় পোস্ট দেখে একটি সেগুন কাঠের খাট, একটি সেগুনের ওয়াল সোকেজ, একটি ওয়ারড্রপ, একটি ড্রেসিং টেবিল বাবদ বিভিন্ন সময় ৩০ হাজার ২৫৯ টাকা প্রদান করেন। ওই সব পণ্যগুলোর বাজার মূল্য আনুমানিক দেড় লাখ টাকা। প্রতারকচক্র ডেলিভারি ম্যান ও কুরিয়ার সার্ভিসের লোক সেজে বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন দিয়ে এবং পণ্যের ডেলিভারির ছবি প্রেরণ করে ভিকটিমের আস্থা অর্জন করে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করে কিন্তু মালামাল প্রেরণ করে না।

পরে ওই নারী এ বিষয়ে জেলা পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস) মো. মুকিত হাসান খান তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় নড়াইলের কালিয়ায় প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে ভুক্তভোগীর ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করেন।

পুলিশ সুপার বলেন, উক্ত প্রতারকচক্র নড়াইল সদর, কালিয়া, ফরিদপুরের ভাঙ্গা, কক্সবাজারের চকোরিয়া ইত্যাদি এলাকায় বসে অনলাইনে ‘ইলিশ বাড়ি চাঁদপুর’, ‘দারাজ বেবী বাইক’, ‘ল্যাপটপ বাজার’ ইত্যাদি বিভিন্ন লোভনীয় পোস্ট দিয়ে পণ্য ও কুরিয়ারের ছবি দেওয়া এবং ডেলিভারি ম্যান পরিচয় দিয়ে মানুষের আস্থা তৈরি করে ফাঁদে ফেলে মানুষের টাকা হাতিয়ে নেন। প্রতারকচক্র বাজারমূল্য থেকে অনেক কম দামে বিভিন্ন পণ্যের মূল্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন। দ্রুতই প্রতারকচক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সময় তন্নী আক্তার তার টাকা ফেরত পেয়ে জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে পুলিশ সুপার পিরোজপুর জেলাবাসীকে অনলাইনে মুখরোচক ও লোভনীয় পোস্ট দেখে পণ্য অর্ডারে আরও সতর্ক ও সচেতন থাকার জন্য পরামর্শ দেন এবং কেউ এ ধরনের ডিজিটাল প্রতারণা বা হয়রানির শিকার হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলে জেলা পুলিশ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।

শাফিউল মিল্লাত/এএমকে