ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদককে আজীবন ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। সনদ স্থগিতসহ তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া আরো ১৬ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ইন্টার্নশিপ বাতিল, সনদ স্থগিত, ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে।

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরের দিকে এক সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়। কলেজের সম্মেলন কক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।

ওই সভায় আজীবন ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণাসহ বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সনদ স্থগিত ও মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ঐষিকা ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান জীমকে।

আজীবন ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে- নুজহাত তাবাসসুমকে। পাঁচ বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত, আজীবনের জন্য ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, আজীবন ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার ও মামলা করার সুপারিশ করার হয়েছে নাইম আল ফুয়াদ খানকে।

পাঁচ বছরে জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে সৌরভ পাল ও ইমরান হোসেনকে। চার বছরের ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে আশরাফুল কবির নাহিদকে। তিন বছরের ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে থেকে বহিষ্কার আল নাহীয়ান খানকে। দুই বছর অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে আজিজুল হক প্রান্ত, সাদমান প্রান্ত ও ইফতেখার আহমেদকে।

এক বছর অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে অনুজ বিশ্বাসকে। ছয় মাস অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার ও আজীবন ছাত্রাবাস থেকে থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে মাসুক উল্লাহ মুগ্ধ, আকিফুর ফারহান, প্রান্তিক চন্দ্র মোহন্ত, তাজবিন আহমেদ, মাহমুদুল হাসান ও শামীম রেজা আয়নকে।

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, উল্লিখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে কলেজের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ফারুক আহমেদকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ দিলরুবা জেবা বলেন, আজকের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশ নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনা শেষে কাউন্সিলে সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অধ্যক্ষ দিলরুবা জেবা আরও বলেন, গত ২৪ আগস্ট কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এক সভা হয়। ওই সভায় এ কলেজে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাদেরকে ওই মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদ দেওয়া হয়।

জহির হোসেন/জেডএস