সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার বাকি মাত্র সাতদিন। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরার বেশির ভাগ প্রতিমা তৈরির অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন দেবী দুর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে রংতুলির কাজ করে যাচ্ছেন শিল্পীরা।

জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলার সাতটি উপজেলার ৫৬২টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৯৯টি, আশাশুনিতে ৯৫টি, দেবহাটায় ২১টি, কলারোয়ায় ৩৯টি, তালায় ১৯৬টি, কালীগঞ্জে ৪৯টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ৬৩টি মণ্ডপ রয়েছে।

বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে সাতক্ষীরার বিভিন্ন মন্দির এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাটির কাজ শেষে এখন রংতুলির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। আবার কেউ রং মিশিয়ে দিচ্ছেন। তাদের যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন তারা। প্রতিমার পরিপূর্ণ রূপ দিতে রংতুলির শেষ আঁচড় দেওয়া হচ্ছে। কেউ আবার সাজসজ্জার কাজ করছেন।

জেলার মায়ের বাড়ি মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন দেবহাটা উপজেলার টিকিট গ্রামের সাধন সরকারসহ কয়েকজন। এ সময় ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় সাধন সরকারের। তিনি বলেন, আমি একজন প্রতিমাশিল্পী। সাতক্ষীরা জেলা মন্দিরে কাজ করছি। আমাদের কাজ করতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিনের মতো সময় লাগছে। যেহেতু পূজা সামনে, এজন্য আমরা একটু ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটাচ্ছি। আশা করছি ষষ্ঠীর এক থেকে দুদিন আগে আমাদের প্রতিমার কাজ শেষ করতে পারব। রংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। এটি শেষ করতে এক থেকে দুদিন সময় লাগবে। দুদিন পরে আমরা অন্য কোথাও চলে যাব।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিমুল বাড়িয়া গ্রামের প্রতিমাশিল্পী মিলন কুমার দাশ বলেন, আমরা এবার আটটি মন্দিরের কাজ করছি। কোথাও ১০ দিন, আবার কোথাও ১২দিন সময় লাগছে। এখন সব মাটির কাজ শেষ, চলছে রংেয়র কাজ। বর্তমানে দুটি তৈরি হয়ে গেছে। আজ তিন নম্বরের কাজ চলছে। এখনও পাঁচটা প্রতিমা আমাদের রয়েছে। এগুলো ষষ্ঠীর আগে শেষ হয়ে যাবে।

সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, ব্যাপক উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। যদিও জেলায় এবার প্রচুর বন্যা, সে কারণে কিছু পূজা কম হবে। এরপরও সাতক্ষীরায় ৫৬২টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

‘নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের নেতৃবৃন্দ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তারা আশ্বস্ত করেছেন, কোনো অসুবিধা হবে না। আপনাদের পাশে আমরা আছি এবং থাকব। সবাই মিলেমিশে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। এ ছাড়া ডিসি ও এসপি মহোদয়, এমনকি খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মহোদয় আমাদের নিয়ে বসে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমরা আমাদের কথা বলেছি, তারা তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা আশা করি সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করব। তারাও নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা করবেন।’

বিশ্বনাথ ঘোষ আরও বলেন, এবারের দুর্গাপূজা খুব উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন হবে। দেশবাসীকে অগ্রিম শারদীয় শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

ইব্রাহিম খলিল/পিএইচ