মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বালি কাটার ড্রেজারের পানির তোড়ে সড়ক ভেঙে তাতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে ওই পথে যাতায়াতকারী প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নে বাঁশগাও-নয়ানগর সড়কের বাঁশগাও কবরস্থানের প্রায় ১৫০ ফুট সামনে ড্রেজার দিয়ে জমিতে বালু ফেলা হয়। এতে পানির চাপে ওই স্থানের সড়কের ৩০ ফুট অংশ ভেঙে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পাঁচ গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয়রা জানান, মুন্সীগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ভুলু মুন্সী এই বালু ভরাটের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। রাস্তার পাশে খালি জমিতে বালু ভরাটের জন্য সেই সড়কের ওপর দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। এতে পানির স্রোতে রাস্তাটি ভেঙে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন গাড়ি তো দূরের কথা, ভাঙা স্থানের কাদা-পানি মাড়িয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব রাস্তাটি মেরামত করার দাবি জানান তারা।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটি মেরামত করছেন কিছু শ্রমিক। তাদের মধ্যে হোসেন বলেন, ‘ভুলু ভাই আমাদের এই রাস্তাটি মেরামত করতে বলেছেন। তিনি যাবতীয় সব মালামাল কিনে দিয়েছেন। আমরা শুধু তার হুকুম বাস্তবায়ন করছি। এ ব্যাপারে আমরা কিছু বলতে পারব না।’

অভিযোগের ব্যাপারে ভুলু মুন্সী বলেন, ড্রেজার ব্যবসার সঙ্গে আমি জড়িত না।

তাহলে ভেঙে যাওয়া সড়ক আপনি কেন সংস্কার করছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ভুলু মুন্সী বলেন, ওই রাস্তা দিয়ে আমার কিছু পাথর যাবে। রাস্তা ভেঙে পড়ায় পাথর নিতে পারছি না। তাই নিজের স্বার্থে কোস্টগার্ডের সঙ্গে মিলে রাস্তাটি সংস্কার করছি।

বিষয়টি সম্পর্কে এলজিইডির গজারিয়া উপজেলা প্রকৌশলী সামিউল আরেফিন বলেন, সড়ক ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি আমরা জেনেছি। এরপর ওই সড়কটি সংস্কার করার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্যকে বলা হয়েছে। তবে বালু ভরাটের পানির কারণে রাস্তাটি ভেঙেছে এমন কিছু আমাদের জানা ছিল না। আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।

উল্লেখ্য, গজারিয়ায় অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তারা কোথাও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। সম্প্রতি অবৈধ ড্রেজারের নিষ্কাশিত পানির তোড়ে হাজারো মানুষের চলাচলের সড়ক সম্পূর্ণ ধসে যায়।

ব.ম শামীম/এফআরএস