সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ড. জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী সদ্য সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুর জামিন নামঞ্জুর করে ৭ দিনের রিমান্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে সদর থানা পুলিশ তাদেরকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান রঞ্জু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। এ সময় রিমান্ডের বিরোধিতা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। পরে দীর্ঘ প্রায় ৩২ মিনিট শুনানি শেষে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ (সদর আমলি আদালত)-এর বিচারক মো. রাসেল মাহমুদ তাদের দুজনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিক সরকার ও সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।

তারা বলেন, জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামীর নামে তিনটি হত্যা ও একটি অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। এই চারটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তারা। এর মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান রঞ্জু হত্যা মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। এই মামলায় জান্নাত আরা হেনরী ৭ নম্বর ও তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবু ৯ নম্বর আসামি। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করেন ও আমরা বাদীপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করি। পরে বিজ্ঞ আদালত তাদের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, ৪ আগস্ট জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান রঞ্জু, ছাত্রদলের সদস্য মো. সুমন ও যুবদলের কর্মী আব্দুল লতিফ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ২২ আগস্ট রাতে নিহত রঞ্জুর স্ত্রী পৌরসভার মাছুমপুর মহল্লার মৌসুমী খাতুন, ছাত্রদলের কর্মী নিহত সুমনের বাবা শহরের গয়লা মহল্লার গঞ্জের আলী এবং একই মহল্লার নিহত যুবদলকর্মী আব্দুল লতিফের বোন মোছা. সালেহা খাতুন বাদী হয়ে এমপি জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করে তিনটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

এই তিনটি হত্যা মামলা ছাড়াও সরকারি নির্দেশ মোতাবেক তাদের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ও গুলি জমা না দিয়ে নিজ দখলে রাখা এবং পরে তাদের সেই অস্ত্র ও গুলি সদর উপজেলার একটি নির্মাণাধীন মসজিদের সিঁড়ির নিচ থেকে উদ্ধারের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলার বর্ষীজোড়া গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরে তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদেরকে আদালতে আনা হয়। এ সময় তাদের শাস্তি চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রপ্রতিনিধি, নিহতের স্বজন ও বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ।

শুভ কুমার ঘোষ/এমজেইউ