জামিনে বের হয়ে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন করলেন যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী। এর আগে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে উপজেলা সদরের স্মৃতিসৌধের সামনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলার মহিষখোচা বাজারে বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে বিদ্যুৎকর্মীদের উপর হামলা চালালে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলীকে।

জিন্নাত আলী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। তিনি মহিষখোচা ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলী দীর্ঘদিন ধরে দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে মহিষখোচা বাজারে অবৈধ বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে আসছিলেন। তিনি ওয়ার্কশপ ও বাজারের ১৫/২০টি দোকানে এ সংযোগ দেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সেই অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিদ্যুৎকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালান জিন্নাত আলী ও তার লোকজন। হামলায় আহত হন নয় বিদ্যুৎকর্মী। তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও সেনা সদস্যরা গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ওই ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওই দিনই আদিতমারী জোনাল অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ জালাল বাদী হয়ে জিন্নাত আলী ও তার ছেলে রুবেল মিয়ার (১৯) নামসহ অজ্ঞাত ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাসহ কয়েকটি ধারায় আদিতমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

জানা যায়, যুবলীগ নেতা জিন্নাত আলীর নেতৃত্বে মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ান ও যুবলীগ নেতার আত্মীয়-স্বজন।

মানববন্ধন থেকে ডিজিএমকে স্বৈরাচার আখ্যা দিয়ে তাকে এক ঘণ্টার মধ্যে বদলির দাবি করা হয়। মানববন্ধন শেষে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন যুবলীগ নেতার চাচা স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ান ছকমল হোসেন, প্রতিবেশী রাব্বুল, যুবলীগকর্মী মোস্তাক জামান পিপলু প্রমুখ।

আদিতমারী জোনাল অফিসের জেনারেল ম্যানেজার আইয়ুব আলী বলেন, স্থানীয় কিছু ইলেক্ট্রিশিয়ান ও দালাল বিগত দিনে দালালি করে গ্রাহকদের হয়রানি করতো। আমি আসার পরে অফিস দালালমুক্ত ঘোষণা করি। এতে তারা ক্ষিপ্ত হন।

‘যুবলীগ নেতা জিন্নাত বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতার জোরে লাইনে হুক লাগিয়ে ওয়ার্কশপসহ বাজারে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ বিক্রির ব্যবসা করেছেন। সেই অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও মামলা করায় তিনি ক্ষেপে গিয়ে মানববন্ধন করতে পারেন। আমি যা করেছি তা বিধিসম্মত। বদলি করার দায়িত্ব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। আমি এতে বিচলিত নই।’

নিয়াজ আহমেদ সিপন/