মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানায় হামলা চালিয়া ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সিরাজদিখানের রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমানকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে তাকে সাতদিনের পুলিশ রিমান্ডসহ মুন্সীগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়।

মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-২ এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহসিনা হোসেন টুষি তার রিমান্ড আবেদন না মঞ্জুর করে জেলগেটে তিনদিনের জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেন।

এর আগে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টার দিকে মজিবর রহমানের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি রাজানগর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর গ্রামের মৃত মানিক ব্যাপারীর ছেলে। নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।

জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবরে উত্তেজিত কয়েক শ মানুষ ওই দিন বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সিরাজদিখান থানার মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে থানা ঘেরাও করে। এ সময় উত্তেজিত জনতা থানার মূল ফটকের সামনে অগ্নিসংযোগ করে। একপর্যায়ে থানার প্রধান গেট ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে থানার ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশের ওপর আক্রমণের প্রস্তুতি নিলে সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।

বিকাল পৌনে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত থানার ফটকে জড়ো হয়ে মোট তিন দফা হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ওই ঘটনায় মো. শান্ত (৩০), শামীম (৩০) ও আশিক (৩০) নামের তিনজন পুলিশের ছোড়া গুলিতে আহত হন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ওই ঘটনায় গত ২৭ আগস্ট সিরাজদিখান থানার এসআই ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৪৫০ জনের বিরুদ্ধে মোট ১৩টি ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-১৬। মামলার এজাহারে থানার মূল ফটকে অগ্নিসংযোগ ও থানার প্রধান গেট ভাঙচুর করে উচ্ছৃঙ্খল দুষ্কৃতিকারীরা সেখানে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের হত্যাচেষ্টা এবং অস্ত্র ও গুলি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তারা কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের জখম করে তাদের কাছ থেকে শটগানের ৯২টি কার্তুজ ও ১১২ রাউন্ড চাইনিজ রাইফেলের গুলিসহ একটি ইয়ামাহা মোটরসাইকেল নিয়ে যায়।

সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর সিরাজদিখান থানায় হামলা ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

মুন্সীগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ মিজানুর ইসলাম আসামির রিমান্ড আবেদন না মঞ্জুর করে তিনদিনের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়ে কারাগারে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আদালতের বেঞ্চ সহকারীর কাছে তথ্য নিন। আমি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেব না। এসপি স্যারের নিষেধ আছে।

ব.ম শামীম/পিএইচ