লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের মালিকানাধীন অর্ধশতবর্ষী একটি কড়ই গাছ অনুমতি ছাড়াই কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। বাড়ি ও দোকানের শোভাবর্ধনের জন্য শামছুল আলম ভূঁইয়া নামে এক ব্যবসায়ী শ্রমিকদের দিয়ে গাছটি কাটিয়েছেন। তবে স্থানীয়দের রোষানলে পড়ে গাছের নিচের অংশটুকু কাটাতে পারেননি তিনি।  তার দাবি, রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছ থেকে গাছ কাটার অনুমতি নিয়েছেন।

কিন্তু রায়পুরের ইউএনও ইমরান খান জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তিনি গাছটির ডালপালা কাটার অনুমতি দিয়েছেন। তবে গাছটি কাটার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

খবর পেয়ে জেলা পরিষদের লোকজন ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে গাছের কাটা অংশগুলো জব্দ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মো. মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, রায়পুর-হায়দারগঞ্জ সড়কের পাশে অর্ধশতবর্ষী কয়েকটি কড়ইগাছ রয়েছে। নতুন বাজার এলাকায় রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী শামছুল আলমের দোকান ও বাসার রাস্তার পাশে একটি গাছ রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করে শামছু গাছটির ডালপালা ছাঁটাই করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে সম্প্রতি আবেদন করেন। বিষয়টা উপজেলা বন ও পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাকে দেখার জন্য বলেন ইউএনও। এতে তড়িঘড়ি করে শামছু শনিবার মধ্যরাতে ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে শ্রমিকদের দিয়ে গাছটি কাটান। গাছটির ৯০ ভাগই কাটা হয়েছে। এর মধ্যে নিচের গোঁড়ার টুকরো কাটা বাকি রয়েছে।

পৌরসভার দেনায়েতপুর এলাকার আবুল হাশেম পাটওয়ারী বলেন, জেলা পরিষদের অনুমতি না নিয়ে রাতারাতি চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে গাছটি কাটা হয়েছে। এটি অনেক বড় অন্যায়। দূর থেকে নিজের বাড়ি সুন্দর দেখানোর জন্য এটি করা হয়েছে। গাছটির বাজার মূল্য ৩-৪ লাখ টাকা হবে।

ব্যবসায়ী শামছুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ইউএনওর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গাছটি কাটা হয়েছে। আপাতত কাটা গাছ আমার বাসার ভেতরে রাখা হয়েছে।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান খান বলেন, গাছটি ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করায় কয়েকটি ডালপালা কাটার অনুমতি দিয়েছি। ওই ডালপালাগুলো উপজেলায় রাখার জন্য বলা হয়েছে। গাছ কাটার কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটার খবর পেয়েছি। আমরা লোক পাঠিয়েছি। কাটা গাছের অংশগুলো আমাদের জিম্মায় আনা হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এসকেডি