আশুলিয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কামাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে শিল্প পুলিশ-১ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদ মিয়া আজ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গতকাল আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় মণ্ডল নিটওয়্যার গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে আলোচনায় বসেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় শ্রমিকরা ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ দুই শ্রমিককে গুম ও দুইজনকে ধর্ষণ করেছে বলে গুজব ছড়ায়। এছাড়া পার্শ্ববর্তী এলাকার ন্যাচারাল ডেনিমস ও ন্যাচারাল ইন্ডিগো লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা অযৌক্তিক বিভিন্ন দাবিতে ফ্যাক্টরিতে কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। এক পর্যায়ে অসন্তোষের কারণে কর্তৃপক্ষ এই দুটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করলে সব শ্রমিক একযোগে বের হয়ে আসে। এসময় তাদের সঙ্গে ম্যাঙ্গো টেক্স লিমিটেড কারখানার উশৃঙ্খল শ্রমিকরা বহিরাগতদের নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে টঙ্গাবাড়ি এলাকায় মণ্ডল গার্মেন্টসের সামনে অবস্থান নেন। পরে তারা মণ্ডল গার্মেন্টসের ভেতরে শ্রমিকদের যৌথ বাহিনী আটকে রেখেছে বলে গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

এজাহারে আরও বলা হয়, শিল্প পুলিশ ও র‍্যাবের কর্মকর্তারা শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু উত্তেজিত শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম ও র‍্যাব-৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আক্তারুজ্জামানসহ ১০-১২ জন যৌথ বাহিনীর সদস্য গুরুতর আহত হন। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর পাঁচটি, র‍্যাবের দুটি ও শিল্প পুলিশের একটিসহ ৮টি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।

এ ঘটনায় আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কামাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

লোটন আচার্য্য/এসকেডি