ময়মনসিংহে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাসের ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে শিবিরের নেতাকর্মী পরিচয়ে দলবেঁধে মহড়া দিয়েছেন কয়েকজন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে হট্টগোল সৃষ্টি করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

গত ২৯ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ নগরীর চরকালীবাড়ী বিআরটিসি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এনিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে বাইরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে ময়মনসিংহ বিআরটিসি কার্যালয়ের ব‍্যবস্থাপক মো. কামরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে এ তথ‍্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর শিবির পরিচয় দিয়ে শহীদুল্লাহ ও জসীম নামে দুই ব‍্যক্তি আমাদের অফিসে এসে কোনো সড়কে কতগুলো গাড়ি, কারা চালায়, তা জানতে চায়। এ সময় কথাবার্তার একপর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে, হট্টগোল সৃষ্টি করে। পরে আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মাহাদি হাসান তারেকের নেতৃত্বে আরও একদল শিবিরের নেতাকর্মী আমার অফিসে ঢুকে কক্ষে থাকা বিগত সরকারের সময়ের নানা ধরনের বই-কাগজপত্র আড়াল থেকে বের করে এনে আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এ সময় তারা আমাকে হুমকি দিয়ে বলে যে- এখন থেকে আমাদের লোক দিয়ে বিআরটিসির সবগুলো সড়কের গাড়ি চলবে। না হলে সমস‍্যা হবে বলে আমাকে শাসিয়ে গেছে। 

ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে এবং কার্যালয়ের সিসি ক‍্যামেরার ফুটেজ অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘটনার সময় শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ময়মনসিংহ মহানগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাকিব হাসান রিমন, যুগ্ম সম্পাদক নাহিয়ান রহমান নাফি এবং গণঅধিকার পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও নাজমুস সাকিবসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।   

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মাহাদি হাসান তারেক বলেন, আমরা ওই অফিসে দুর্নীতির অনুসন্ধানে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা অনেক ধরনের ফ‍্যাসিবাদী ডকুমেন্ট পেয়েছি। আমরা অফিস নিয়ন্ত্রণ নিতে যাইনি। 

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ঘটনার সত‍্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমিসহ জামায়াত-শিবিরের কয়েকজন নেতাকর্মী ওই অফিসে গিয়েছিলাম তাদের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে। এ সময় আমাদের ছেলেরা ওই কার্যালয়ে বিগত সরকারের নানা বই ও কাগজপত্র দেখে একটু উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এতে কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে আমরা জানতে চেয়েছিলাম- কোন সড়কে কতগুলো বাস চলে এবং সেগুলো কারা চালায়? 

এ সময় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নিজের পরিচয় আরও স্পষ্ট করে বলেন, আমি বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ করতাম। তবে বিগত জাতীয় নির্বাচনের আগে আমি ওই সংগঠন থেকে পদত‍্যাগ করেছি। বর্তমানে আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তবে আমি ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহের নয়জন সমন্বয়কদের মধ‍্যে একজন। সাংবাদিক হিসেবে আপনার জানার কথা ছিল আমি সমন্বয়ক হিসেবে আছি কি নাই।

ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. শরীফুল ইসলাম খালিদ বলেন, যারা ডিপোতে গিয়েছিল তাদের মধ‍্যে আমাদের সংগঠনের কেউ নেই। একজন আগে ছাত্রশিবির করতো, কিন্তু এখন তিনি ছাত্র সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন। 

আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর