হাসিনাকে ক্ষমা করার কোনো সুযোগ নেই : মনা
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা বলেছেন, জাতীয়তাবাদী দল প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তবে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল হাসিনাকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু না, খুনি হাসিনাকে ক্ষমা করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলার মাটিতে তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় নগরীর কয়লাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২৯নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রক্তস্নাত দীর্ঘ সংগ্রাম ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা নস্যাৎ করার সকল অপচেষ্টা রুখতে এবং সাম্য ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে এ সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের স্বৈরাচার হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তার দোসররা বাংলাদেশে রয়েছে, যারা ১৭ বছর লুটপাট করেছে, অত্যাচার করেছে, মানুষ গুম-খুন করেছে, তারা এখনো দেশ ছেড়ে যায়নি। আমাদের যে সংগ্রাম ছিল ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ, সেই সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন আমাদের আরও পথ পাড়ি দিতে হবে, আরও লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ইলিয়াস আলী-চৌধুরী আলমসহ ৫০০-এর বেশি বিএনপি নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। অনেক শিশু জানে না তার বাবা বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে। মা জানেন না তার সন্তান বেঁচে আছে নাকি নেই। স্ত্রী জানে না তার স্বামী বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে। বাংলাদেশে প্রকাশ্যে দিবালোকে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। যারা হত্যা করেছে তাদেরকে আদালত থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজের খুনি ভাইদের ফাঁসির আদেশ হয়েছিল, কিন্তু তৎকালীন রাষ্ট্রপতি তাদের ক্ষমা করে জেলখানা থেকে বের করে দিয়েছে। বাংলাদেশে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেনি। প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী ও আদালতকে ধ্বংস করেছে। আমাদের নামে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। আদালতে জামিন নিতে গিয়ে আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে শেখ বাড়ি থেকে কোন ওহি আসে। বিচারক জামিন দেবেন কি দেবেন না সেই নির্দেশ শেখ বাড়ি থেকে আসত। দেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ছিল না।
তিনি আরও বলেন, দেশ মেরামতের জন্য তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন। তিনি কখনোই ক্ষমতায় যেতে চাননি। তিনি জনগণের ভোটাধিকার জনগণের হাতে ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব আইন সংশোধন করে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিলেন। সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থায় তিনি বলেছিলেন শেখ মুজিব আজীবন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকবেন। শেখ হাসিনাও বাবার পথে হাঁটতে গিয়ে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বিএনপি বিশ্বাস করে এই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। বিএনপির জনগণের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে। বিএনপির নাম ব্যবহার করে কেউ কোনো ধরনের অপকর্ম করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে ৩৯ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশেষ বক্তা ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম তুহিন। নগরীর ২৯নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম জোয়াদ্দারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, খুলনা সদর থানার আহ্বায়ক কে এম হুমায়ুন কবীর (ভিপি হুমায়ুন), খুলনা সদর থানার সদস্যসচিব মোল্লা ফরিদ আহমেদ।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ, অ্যাডভোকেট শহীদুল আলম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শহিদুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল আলম খান, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, মিজানুর রহমান মিলটন, তরিকুল ইসলাম সোহান, আজাদ হোসেন, মাহবুবুর রহমান লিটু, বেলাল হোসেন, হেলাল হোসেন, ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম, কবির, হাসান হাওলাদার রাজিব, সোহাগ, শিখা জামিলা, জেসমিন প্রমুখ।
মোহাম্মদ মিলন/এমজেইউ