বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা একটি নতুন ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। এজন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে খুলনা মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক লড়াইয়ে হেরে গিয়ে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল। যার অংশ হিসেবে জুডিশিয়াল ক্যু করার অপচেষ্টা করে। তাতে ব্যর্থ হয়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথিত অভিযোগ আনে। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনগণ তাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে।

ভবিষ্যতেও এ ধরনের ষড়যন্ত্র হতে পারে উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তাদের যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সব শ্রেণিপেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সত্য কথা লিখুন। বিগত ১৫ বছরে জামায়াতকে ভিন্নভাবে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু আজ সত্য কথা লেখার সুযোগ পাচ্ছেন বলেই জামায়াত সম্পর্কে মানুষের ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে গণহত্যাকারী হিসেবে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের হত্যা, শাহবাগে অসভ্য জমায়েত এবং সর্বশেষ জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা করে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তারা গণহত্যাকারী দল।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পটপরিবর্তনের পর দেশে আওয়ামী লীগের একজন কর্মীও খুন হয়নি। অথচ ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে দেশের পাঁচ লাখ লোক মারা যাবে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের কন্ট্রোল করতে পারে না বলে জনগণকেও একই মনে করে। কিন্তু দেশের জনগণ দেখিয়ে দিয়েছে তারা কাণ্ডজ্ঞানহীন নয়।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, শেখ হাসিনা জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে গিয়ে আজ নিজেই নিষিদ্ধ হয়েছে। বিগত ১৭ বছরের জুলুম-নির্যাতন, খুন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, মানুষের বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে আজ মানুষ নতুন করে স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। যে স্বাধীনতা আমাদের নতুন প্রজন্ম এনে দিয়েছে তাকে আর যেন কেউ নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলালের পরিচালনায় সুধী সমাবেশে বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, টিম সদস্য অধ্যক্ষ মশিউর রহমান খান ও মাস্টার শফিকুল আলম এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগর সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন প্রমুখ।

মোহাম্মদ মিলন/এসএসএইচ