বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. আলমগীর শেখ তিতুর (৪২) জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে তিতুকে রাজবাড়ীর ১নং আমলি আদালতে তোলা হলে বিচারক মো. সুমন হোসেন তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

গতকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার ধলেশ্বরী টোল প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব-১০ এর একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার আলমগীর শেখ তিতু রাজবাড়ী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ২নং বেড়াডাঙ্গা এলাকার মৃত আব্দুল গণি শেখের ছেলে। তিনি রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও মেয়র নির্বাচনের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তিনি আওয়ামী লীগের থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন।

র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লে. কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ৩০ আগস্ট রাজবাড়ী সদর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর শেখ তিতুকে গতকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার ধলেশ্বরী টোল প্লাজা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে গতকাল রাতেই রাজবাড়ী সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামির বিরুদ্ধে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতিসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।

রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার দিবাগত রাত আড়াটার দিকে র‍্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্প সাবেক পৌর মেয়র আলমগীর শেখ তিতুকে আমাদের সদর থানায় হস্তান্তর করে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালতের বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

এর আগে, রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করে রাজবাড়ী সদর থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অনার্সপড়ুয়া শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য রাজিব মোল্লা। মামলায় রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলমগীর শেখ তিতু সাত নম্বর আসামি ছিলেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী, রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী কেরামত আলী, কাজী ইরাদত আলীর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী রকিবুল হাসান শান্তনু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ রাজিব, জেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুজ্জামান মিয়া সোহেল ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহিন শেখ। এতে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ ও ছাত্রলীগের ১৭০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/