ফেনীতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পাবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া সব চেয়ে বেশি রয়েছে ফেনী পৌরসভা ও ফেনী জেনারেল হাসপাতালের কাছে। প্রতিষ্ঠান দুটির কাছে বকেয়া যথাক্রমে  ৭০ ও ৭৩ লাখ টাকা।

এছাড়াও পুলিশ বিভাগের কাছে বকেয়া ৬২ লাখ টাকা। তবে সম্প্রতি ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে পুলিশ বিভাগ ও রেলওয়ে।

বিপিডিবি ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ৫ লাখ টাকা, সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ৩ লাখ টাকা, গর্ণপূর্ত বিভাগে ২ লাখ টাকা ও ফেনী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে ২ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ফেনীর বিসিকে নিশাদ স্টিল মিলের কাছে ২৮ লাখ ৭৫ হাজার ২১৪ টাকা, মর্ডার্ন কোল্ড স্টোরের কাছে ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও কোয়ালিটি জুট মিলের কাছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে।

এসব বকেয়া বিল আদায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও ২০০ গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ।

তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া বিল আদায়ে মাইকিং ও নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো বেশিরভাগ গ্রাহক বিল পরিশোধ করেননি।

ফেনী বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ফেনীতে বিপিডিবির মোট গ্রাহক রয়েছেন ৮৬ হাজার ৪০০ জন। তাদের মধ্যে ৩১ হাজার ৬০০ গ্রাহকের কাছে মোট ১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। ফেনীতে প্রিপেইড গ্রাহকের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৩৮৯ ও পোস্টপেইড গ্রাহকের সংখ্যা ২৮ হাজার ১১ জন।

বকেয়া বিদ্যুৎ বিল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফেনী পৌরসভার সচিব আবু জর গিফারী বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। 

তবে পৌরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. হিরণ দাবি করেন, পৌরসভার কাছে বকেয়া বিল ৭০ লাখ টাকা নয়, ৬০ লাখ টাকা।

একই প্রসঙ্গে জানতে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল খায়ের মিয়াজীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি। এর আগে গত বছরের জুনে ২১ লাখ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছিল সরকারি এ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটি।

বিদ্যুতের বকেয়া বিল প্রসঙ্গে ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. শিহাব উদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।

এ ব্যাপারে বিপিডিবি ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ বলেন, ইতোমধ্যে মহিপাল ট্রমা সেন্টার ও গণপূর্ত বিভাগের কিছু অংশসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রিপেইড মিটার লাগানো হয়েছে। এতে করে গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকবে না। শিগগিরই সব প্রতিষ্ঠানকে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হবে। এতে ভুল, অতিরিক্ত বা ভৌতিক বিলের কোনো সম্ভাবনা থাকবে না।

তারেক চৌধুরী/এমএ