রাজবাড়ীতে নিখোঁজের দুই দিন পর মিনহাজুল শেখ (১২) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৮টার দিকে সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের পূর্ব ভবদিয়া গ্রামের একটি ধানখেত থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মিনহাজুল সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের পূর্ব ভবদিয়া গ্রামের আজাদ শেখের ছেলে।

পরিবারের দাবি, স্থানীয় মোক্তার শেখের মাল্টা বাগানে ঢুকে মাল্টা খাওয়ার অপরাধে মিনহাজুলকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করে লাশ ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়েছে।

মিনহাজুলের মা খাদিজা বেগম বলেন, রোববার বিকেলে মিনহাজুল বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। সে তার বন্ধু সুমনকে বলেছিল মোক্তারের মাল্টা বাগানে যাবে।পরে আমরা মাল্টা বাগানে তাকে খোঁজার জন্য মোক্তার শেখের কাছে বার বার বাগানের গেটের চাবি চাইলেও সে চাবি দেয়নি। পরে আমরা রাজবাড়ী সদর থানায় জিডি করি। সকাল ৮টার দিকে মোক্তার শেখের মাল্টা বাগানের পাশে একটি ধানক্ষেতে আমার ছেলের মরদেহ পাওয়া যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোক্তার শেখ তার মাল্টা বাগানের চারপাশে জিআই তার দিয়ে ঘিরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখতেন। হয়তো মাল্টা বাগানে ঢোকার সময় মিনহাজুল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। পরে বাগানের মালিক লাশটি গুম করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ধানক্ষেতে ফেলে রাখে। তার হাত-পায়ের কিছু অংশ হয়তো শেয়ালে খেয়েছে।

এদিকে মিনহাজুলের মরদেহ পাওয়ার পর থেকেই গাঢাকা দিয়েছেন মাল্টা বাগানের মালিক মোক্তার শেখ।

এ বিষয়ে তার ভাই সরোয়ার শেখ বলেন, আমার ভাই বাড়িতে নেই। মাল্টা বাগানের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সেখানে কী ঘটেছে আমি তা বলতে পারছি না। তবে ছেলেটির মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমি শোকাহত।

রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি মাল্টা বাগানে ঢোকার সময় বৈদ্যুতিক শক লেগে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কারণ মাল্টা বাগানের চারপাশে জিআই তারের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া ছিল। বাগানের প্রবেশপথে আমরা গেটে একটি পোস্টারে সতর্কীকরণ বার্তা দেখতে পাই। 

সেখানে লেখা পুরো বাগানটি বৈদ্যুতিক সংযোগে আবদ্ধ, ঢুকলে বিপদ হতে পারে। আমাদের ধারণা বাগানে ঢুকতে গিয়ে মিনহাজুল বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে। পরে তার লাশ বাগান থেকে ১০০ গজ দূরে একটি ধানখেতে ফেলে রাখে।

তিনি আরও বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এনএফ