গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে ভুয়া বিল-ভাউচার প্রস্তুত করে কলেজ তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অধ্যক্ষ মো. ওহিদ আলম লস্করের বিরুদ্ধে চলতি বছরের জানুয়ারিতে অভিযান পরিচালনা করেছিল দুদক। তখন স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্যকে দিয়ে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়। ঘটনার ৮ মাস পর ফের অভিযান পরিচালনা করেছে সংস্থাটি। তবে এবার আরও কিছু অভিযোগ যুক্ত হয়েছে। যার সত্যতাও মিলেছে প্রাথমিক তদন্তে।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন জেলা দুদকের উপ-পরিচালক  মো. মশিউর রহমান।

এর আগে দুপুরে দুদকের অনুসন্ধানী টিমের প্রধান সহকারী পরিচালক আফসার উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি টিম প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে এ অভিযান পরিচালনা করে। 

অভিযানে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ২০২১—২২ ও ২০২২—২৩ অর্থবছরে কলেজ ডেভলপমেন্ট এডুকেশন প্রজেক্টের (সিডিইপি) ক্রয় করা বিভিন্ন সামগ্রী এবং প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সরঞ্জাম মেরামত ও ইনটেরিওর ডিজাইনিংয়ের জন্য খরচ করা অর্থের ভাউচার সংগ্রহ করে দুদক। ভাউচারের সঙ্গে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয়ে অসংগতি রয়েছে মর্মে টিমের কাছে প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযানে পাওয়া সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের ব্যয় সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র এবং অন্যান্য তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। যা পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানী  টিম এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করবেন বলে জানা গেছে।

চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদকের গোপালগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট টিম একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের সংবাদটি গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে কলেজ অধ্যক্ষ মো. ওহিদ লস্কর স্থানীয় সাবেক এমপি শেখ সেলিমকে দিয়ে দুদককে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়। ওই সময় শেখ সেলিমের সঙ্গে সাক্ষাতের একটি ছবি তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন। 

গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মশিউর রহমান বলেন, আগের  অভিযানের ধারাবাহিকতায় সোমবার দুপুরে জেলা দুদকের একটি অনুসন্ধানী টিম সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এবার আগের চেয়ে আরও কিছু অভিযোগ যুক্ত হয়েছে। যার কারণে নতুন করে কিছু তথ্য  ও পূর্বের কিছু তথ্য বাকি ছিল সেই তথ্য সংগ্রহে আজ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। পূর্বের ন্যায় এবারও ভাউচারের সঙ্গে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয়ে অসংগতি রয়েছে বলে আমরা প্রাথমিক তদন্তে পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সব প্রকার রেকর্ডপত্র এবং অন্যান্য তথ্যাদি সংগ্রহ করা হলে সব একত্রে পর্যালোচনা করে আমরা একটি প্রতিবেদন কমিশনে পাঠাবো। 

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওহিদ লস্করের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। 

মাহমুদুল হাসান রাজন/এমএ