রাজবাড়ীর কালুখালীতে চোর সন্দেহে মো. নাজমুল মোল্লা (৪৫) নামে এক ভ্যানচালককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে শনিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহত মো. নাজমুল মোল্লা ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার পূর্ব গাড়াকোলা গ্রামের মৃত আহাম্মদ মোল্লার ছেলে। তিনি ভ্যান চালানোর পাশাপাশি ভাঙারি ব্যবসা করতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের মাধবপুর বাজারে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরির সময় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে নাজমুল। এরপর চোর সন্দেহে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের স্ত্রী আন্না বেগম দাবি করে বলেন, আমার স্বামী অনেক ভালো মানুষ। গত মঙ্গলবার আমার স্বামী কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের মেঝ মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। শুক্রবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে ৪-৫ জন মানুষ তাকে ডাকাডাকি করে। এরপর ১০-১২ জন মানুষ এসে তাকে চোর সন্দেহে মারতে থাকে। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আমার মেয়ে-জামাই দেখেছে তাকে কারা মেরেছে। আমি সবার নামে মামলা করবো।

কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মো. মেহেদী হাসান মুঠোফোনে বলেন, সকাল ৯টার দিকে কয়েকজন লোক আহত অবস্থায় নাজমুলকে হাসপাতালের গেটের সামনে রেখে যান। এরপর তিনি নিজেই হেঁটে চিকিৎসার জন্য আমাদের কাছে আসেন। এসব রোগীর ক্ষেত্রে পুলিশকে অবগত করতে হয়। আমরা নিয়ম মেনে সেটা করে চিকিৎসা শুরু করি। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। কিন্তু তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করার মতো কেউ ছিল না। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চিকিৎসা করতে থাকি। দুপুরের দিকে তিনি মারা যান।

কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুর রহমান বলেন, চোর সন্দেহে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাজমুল মারা গেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হবে। ময়নাতদন্তে শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমএসএ