হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউপির সমুজদিপুর গ্রামের আফজল খার ছেলে ইফাজ খা (২৫) এলাকায় আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। 

চুরি, শিশু নির্যাতন, মাদক, অস্ত্র, হামলা, সাইবার ক্রাইম কী অভিযোগ নেই তার বিরুদ্ধে! কোথাও তিনি নিজেকে তথাকথিত সাংবাদিক ও তথাকথিত প্রেসক্লাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে চালান নানা অপকর্ম। অথচ মাধবপুরের মূলধারা সাংবাদিকরা কেউ তাকে চেনেন না। 

সম্প্রতি ‘মাধবপুরে নতুন ত্রাস ইফাজ খা গং’ শিরোনামে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রচার হলে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের মাধ্যমে এটির অধিকতর তদন্তের জন্য কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই রায়হানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ঘটনার সত্যতা প্রমাণ পান। তদন্ত কর্মকর্তা রায়হান বলেন, তাকে পেলেই আটক করা হবে। ইফাজ নিজেকে জজ সাহেব হারুনুর রশিদের আপন ভাগ্নে হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। 

পরে ওই তদন্ত কর্মকর্তা জানতে পারেন, জজ সাহেবের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই তেমন। জজের নাম ভাঙিয়ে চলে ইফাজের প্রতারণা। বিভিন্ন জায়গায় সে জজ সাহেবের আপন ভাগিনা বলে পরিচয় দেন। কোথাও নিজেকে সাংবাদিক বলেও দাবি করেন।

এদিকে নিজেকে তথাকথিত সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্ল্যাকমেইল ও নিজেকে জাহির করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে।

প্রসঙ্গত, সে বিগত ২০২৩ সালের মে মাসে স্থানীয় আরিছপুর আছিয়া খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তালা ভেঙে ওয়াইফাই রাউটার চুরি করে। যা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আপস-মীমাংসা হয়। এ ঘটনার সত্যতা জানিয়েছে স্কুলটির প্রাইমারি প্রধান শিক্ষক ইয়াসিন উদ্দিন। এছাড়া ওই স্কুলটিতে ঘটে যাওয়া আরও ৩টি চুরির ঘটনায়ও সন্দেহের তালিকায় তার নাম এসেছিল।

স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি জিল্লুর নিশ্চিত করেন। ইফাজ ২০২৩ সালের অক্টোবরে তার ক্লিনিক থেকে ১টি পাম্প ও ৪টি ফ্যান চুরি করে।

ইফাজের দাদা ফেইসবুকে লাইভে এসে বলেন, ইফাজ তার মটর চুরি করে স্থানীয় কাশিমপুর কুখ্যাত চোর মানিক এর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে সেটি ধরাও খায়।

স্থানীয় সমজদিপুর গ্রামের মসজিদের তালা ভেঙ্গে সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি ও দান বাক্স চুরি করে নিয়ে যায় পরে সেটি প্রমাণিত হয়। কিন্তু কোনো কিছুই সে ফেরত দেয়নি।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় মসজিদের ইমাম আলেফ খা ও স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসমিন বেগমের বাড়িতে ইফাজ ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা করে বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে লোকজনদের জখম করে। অভিযোগ রয়েছে শিশুসহ নারীদের ওপরও হামলা করা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি নূর মোহাম্মদ পুনরায় তদন্ত করছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইফাজ খা দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি একটি পিস্তল ব্যবহার করেন। তা দিয়ে লোকজনদের ভয় দেখান। এছাড়া তার রয়েছে কয়েকটি রামদা ও দেশীয় অস্ত্র। 

আরকে