নিখোঁজ মেয়ে ও ২ বছরের নাতির সন্ধান পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বৃদ্ধ বাবা-মা। পুলিশ, র‌্যাবসহ প্রশাসনের দারস্ত হয়েও মেয়ের সন্ধান পাননি তারা। অবশেষে মেয়ে মিম আক্তার জুলি (২১) ও তার ছেলে মো. ওমর ফারুকের ছবি নিয়ে বৃদ্ধ বয়সে নেমেছেন রাস্তায়।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সামনে সন্তানহারা এই বাবা-মায়ের দেখা মেলে। সঙ্গে ছিলেন নিখোঁজ মিমের বড় বোন তুলি খাতুন ও তার শিশু সন্তান।

জানা গেছে, স্বামী মো. মনির হোসেনের সঙ্গে ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়ায় থাকতেন মিম আক্তার জুলি। গত ২১ জুলাই সকাল ৮টায় জামাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ২ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান তিনি। এরপর থেকে আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পেয়ে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিখোঁজ মিমের বড় বোন ফারজানা খাতুন আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। র‌্যা্ব-৪ এর কোম্পানি বরাবরও একটি আবেদন দেন তারা। ২ মাসেও নিখোঁজ তরুণী ও তার শিশু ছেলের খোঁজ না পেয়ে অবশেষে রাস্তায় নেমেছেন বাবা-মা ও বোন।

নিখোঁজ মিমের বাবা শেখ সাত্তার বলেন, আমরা অনেক জায়গায় মেয়েকে খুঁজেও তাকে পাইনি। মেয়ের জামাই মো. মনির হোসেনও আমাদের সঙ্গে খুঁজেছেন। পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন অফিসে আমরা গেছি। কেউ আমাদের সহযোগিতা করে না। আমি মেয়েকে ফিরে পেতে চাই।

মিমের মা হেনা বেগম বলেন, নাতির কথা মনে পড়লে আমার গলা শুকিয়ে যায়। ওই শিশু সন্তানসহ আমার মেয়ের কী হলো? থানায় গেলে তারা আমাদের কোনো সদুত্তর দেয় না। আমরা কার কাছে যাব?

নিখোঁজ মিমের স্বামী মো. মনির হোসেন বলেন, অনেক খুঁজেও আমার স্ত্রী-সন্তানকে পাইনি। আমি আমার স্ত্রী সন্তানকে ফেরত চাই।

বোন তুলি খাতুন বলেন, আগস্টের ২১ তারিখের পরে কয়েকটি নম্বর থেকে আমাদের ফোন করেছিল। কিন্তু কেউই বোনের সঙ্গে কথা বলাতে পারেননি। সবাই ভুল তথ্য দিয়েছেন। সেসব নম্বরের ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পারলে হয়ত বোন ও তার ছেলেকে পাওয়া যেতে পারে।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এখানে অল্পদিন হয়েছে যোগ দিয়েছি। খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। নিখোঁজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

নিখোঁজ মিম আক্তার জুলি বাগেরহাট সদর উপজেলার ষাট গম্বুজ ইউনিয়নের দক্ষিণ সায়রা গ্রামের শেখ সাঁত্তারের মেয়ে। বছর পাঁচেক আগে পারিবারিকভাবে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার জামগড়া এলাকার মো. মনির হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জামগড়া এলাকায় স্বামীর সঙ্গেই থাকতেন তিনি।

শেখ আবু তালেব/এফআরএস