নারায়ণগঞ্জে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে তৃণমূল বিএনপির জেলার আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী বিএনপি নেতাদের ফুল দিচ্ছেন। এছাড়া একই ছবিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাবেক একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকেও দেখা গেছে। এতে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর বিএনপিতে নতুন করে কাউকে যুক্ত করা বা যোগদান না করতে উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা রয়েছে। এ নিয়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী চিঠিও ইস্যু করেছেন জেলা ও মহানগর বিএনপির কাছে।

জানা গেছে, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত তৈমূর আলম খন্দকার ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তখন তৃণমূল বিএনপির জেলার কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে আহ্বায়ক ছিলেন মোহাম্মদ আলী। ৫ আগস্টের পর মোহাম্মদ আলী পদত্যাগ করে গত সপ্তাহে রূপগঞ্জে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য কাজী মনিরুজ্জামানের হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করছেন। এছাড়া রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান মোহাম্মদ, আলী আহম্মেদ ও তারাবো ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বিগত সময়ে সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর আশ্রয়ে ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে তারা প্রত্যেকেই কাজী মনিরুজ্জামানের বলয়ে ফিরে আসেন।
 
এ ব্যাপারে মোহাম্মদ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন,  আমরা ৪ ভাই সারাজীবন বিএনপির রাজনীতি করেছি। আমি সেই নব্বই সাল থেকেই বিএনপি করি। আমি বিএনপি থেকেই মেম্বার হইসি। কাজী মনিরুজ্জামান ভাইকে ২০০১ সালে আমি বিএনপিতে ঢুকাইসি। এর মাঝখানে মনির ভাইয়ের লগে একটা গ্যাপ সৃষ্টি হইছিল। এখন মনির ভাই আমারে নিজের থেকেই ফোন দিয়ে বলতেসে তুমি আমার অনেক পুরোনো লোক বিএনপির, সারা জীবন বিএনপি করছো। এখন তুমি আমার সাথে আসো।

তৃনমূল বিএনপিতে যোগদানের বিষয়ে তিনি বলেন, তৈমূর ভাই আমার বড়ির লোক। তিনি বহিষ্কৃত হওয়ার পর তৃনমূল বিএনপি গঠন করেন। সেটাতে তিনি আমারে আহ্বায়ক করেন। কিন্তু সেটা পূর্ণাঙ্গ কমিটি না। ১০-১১ জনের একটা কমিটি। 

এ বিষয়ে জানতে কাজী মনিরুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেনি।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে আমরা সব সময় সজাগ রয়েছি। বিষয়গুলো কেন্দ্রকে অবহিত করা হবে।

সামগ্রিক বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন বলেন, নতুন করে কোনো অনুপ্রবেশকারীকে বিএনপিতে না নেওয়ার কথা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একাধিকবার বলেছেন। তা স্বত্ত্বেও আমাদের কিছু নেতাকর্মী নিজেদের বলয় ভারি করার জন্য বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের বিএনপিতে আশ্রয় দিচ্ছেন। 

আরএআর