নাটোরের সিংড়ায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে সিংড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দাউদার মাহমুদের পক্ষে মোটরসাইকেল শোডাউন করা হয়েছে। 

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মটরসাইকেল শোডাউন শুরু হয়। এরপর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল শোডাউন নিয়ে উপজেলার বিয়াশ বাজারের জনসভায় মিলিত হন। এতে পথে পথে সরু রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

সূত্রে জানা যায়, সিংড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব দাউদার মাহমুদের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে এ শোডাউন শুরু হয়। পরবর্তীতে সেটি ডাহিয়া ইউনিয়নের বিয়াশ বাজারে শেষ হয়। মোটরসাইকেল শোডাউনকে কেন্দ্র করে যাত্রাপথের রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সিংড়া থেকে বিয়াশ বাজার পর্যন্ত শোডাউনের ফলে সরু সাবমারসিবল রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষেরা।

সূত্র আরও জানায়, মোটরসাইকেল শোডাউন শেষ হওয়ার পরে বিয়াশ বাজারের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বিএনপি নেতা দাউদার মাহমুদ। এরপর তিনি সভায় বক্তব্য দেন। এর আগে দুপুরে পর থেকেই সভাস্থলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা অমান্য করে মোটরসাইকেল শোডাউন করায় সিংড়া বিএনপির একাধিক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দলীয় নির্দেশনা অমান্য করায় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে তাদের মোটরসাইকেল শোডাউন করা উচিত হয়নি। কেননা দলের নেতারাই যদি নির্দেশনা না মানে কিংবা মানতে উদ্বুদ্ধ না করে তাহলে কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে দলীয় হাইকমান্ডের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিংড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এবং জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দাউদার মাহমুদ বলেন, আমার একটা জনসভা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মানুষ এসেছিল। চলনবিলে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় মোটরসাইকেলে মানুষ যাতায়াত করে। দলীয়ভাবে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিষেধ করা হয়েছে, যাতে শহরে যানজটের সৃষ্টি না হয়। আমার জনসভা হয়েছিল গ্রামে। এ সময় কোনো যানজটের সৃষ্টি হয়নি।

নাটোর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করার সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে দলীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বিগত ৮ সেপ্টেম্বর দেশের চলমান পরিস্থিতিতে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা দিয়েছিল বিএনপি। যেখানে মোটরসাইকেল বহর বা অন্য কোনো যানবাহনের ‘শোডাউন’ পরিহার করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, এতদ্দ্বারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং এর সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য নির্দেশক্রমে জানানো যাচ্ছে যে, আপনাদের অধিনস্থ কোনো ইউনিটে সাংগঠনিক কাজের উদ্দেশে সফরকালে কোনো ধরনের মটরসাইকেল বহর ও কারসহ অন্য কোনো যানবাহনে শোভাযাত্রা পরিহার করতে হবে।

গোলাম রাব্বানী/এএমকে