বেতন-ভাতার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ঝিনাইদহ ওজোপাডিকোর লাইন সহকারীরা। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ অফিস প্রাঙ্গণে তারা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা নানা স্লোগান দেন।

কর্মসূচিতে লাইন সহকারী ইমামুল হক রকি, আব্দুলাহ আল মামুন, রুবেল হোসেন, মশিউর রহমান, আব্দুল মমিনসহ কয়েকজন বক্তব্য দেন।

আন্দোলনকারী ইমামুল হক রকি বলেন, বছরের পর বছর বিদ্যুৎ অফিসে কাজ করলেও আমরা বেতন-ভাতা পাই না। অফিস টাইমের বাইরে কোথাও কাজে গেলে নামমাত্র পাওয়া টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চালাতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজ করার কারণে অনেকে মারা গেছে, আবার অনেকের অঙ্গহানি হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ আমাদের বেতন-ভাতার কোনো ব্যবস্থা করেনি। তাই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করতে হচ্ছে।

এদিকে লাইন সহকারীরা কর্মবিরতি পালন করায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের। কাপড় ব্যবসায়ী বাদশা মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের দোকানে বিদ্যুৎ লাইন ছিল। দোকান ভেঙে নতুন করে করার সময় লাইন বিচ্ছিন্ন করি। এখন আবার দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য গত চার দিন ধরে ঘুরছি কিন্তু কেউ আসছে না। পরে জানতে পারলাম লাইন সহকারীরা কাজ বন্ধ করে দিয়ে তাদের দাবি আদায়ের আন্দোলন করছে। এখন আমরা পড়েছি বিপদে।

পৌরসভা এলাকার পবহাটি গ্রামের মেহরুজ্জামান সবুজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের মোটরসাইকেল গ্যারেজে বিদ্যুতের সমস্যা দেখা দিলে বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিই। তারা বলে লাইনম্যান সহকারীরা সবাই কর্মবিরতিতে আছে। আপাতত কোনো ধরনের সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন অবস্থায় আমাদের গ্যারেজে কোনো কাজ করতে পারছি না। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার।

তিনি আরও বলেন, লাইনম্যান হালিম বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য গত মাসে ৮ হাজার টাকা নিয়েছে, কিন্তু এখনো পরিশোধ করেনি। তাকে জিজ্ঞাসা করলে বলে এখন অফিসে সমস্যা আছে। অফিসের সমস্যা শেষ হলে বিল পরিশোধ করব। পরে ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে বললে তিনি হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে বলেন।

ঝিনাইদহ ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, লাইন সহকারীদের অফিস থেকে কোনো বেতন ভাতা দেওয়া হয় না, তবে তারা গ্যাটিসের (বিদ্যুৎসেবা দিয়ে টাকা নেওয়া) মাধ্যমে উপার্জনের ব্যবস্থা আছে। তবে এখন লাইন সহকারীরা যে দাবি করছে তাদের দাবির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুতই এর একটা সমাধান আসবে।

আব্দুল্লাহ আল মামুন/এমজেইউ