ফরিদপুরে মিনিবাস ছিনতাই করতে এসে চালকের সহকারী সাদ্দাম শেখকে (২১) হত্যার দায়ে পাঁচজনের যাবজ্জীবন ও  ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই অপরাধে আরেক আসামিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ রায় দেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এরপর পুলিশ পাহারায় তাদেরকে জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া সাদ্দাম শেখ ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের পূর্ব আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতিয়ার শেখের ছেলে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার বাসিন্দা মো. জনি মোল্লা (২৯), সুফী আব্দুল বারী সড়ক এলাকার মো. মেহেদী আবু কাউসার (২৪), রথখোলা রবিদাসপল্লীর রাজেস রবিদাস (২৮), গোয়ালচামট ২নং সড়ক এলাকার মো. রবিন মোল্লা (২৪) ও সালথা উপজেলার রসুলপুর এলাকার সাজ্জাদ হোসেন (২৫)। 

পাঁচ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেন-ফরিদপুর শহরতলীর বদরপুর এলাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন পাঠান (৩৬)। হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি নগরকান্দা উপজেলার পূর্ব সদরবেড়া এলাকার বাসিন্দা হাফিজুল ব্যাপারীকে (২৩) বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর রাতে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি মহল্লার আব্দুল করিম মিয়া সড়কের বাসিন্দা মো. জয়নাল আবেদীনের (৭১) মালিকানাধীন নুপুর পরিবহনের একটি বাস শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড় থেকে হারিয়ে যায়। বাসটি ফরিদপুর-খুলনা রুটে চলাচল করতো। ওইরাতে বাসটিতে চালকের সহকারী সাদ্দাম শেখ বাসের ভেতর ঘুমিয়ে ছিলেন। আসামিরা বাসটি ছিনতাই করে নিয়ে যান। পরদিন সকালে ভাঙ্গা গোলচত্বরে দুটি চাকা খোয়া যাওয়া অবস্থায় পাওয়া যায় বাসটি। বাসের ভেতরে সহকারী সাদ্দামের হাত-মুখ-পা বাঁধা মরদেহ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় ওই বাসের মালিক অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ২৫ অক্টোবর ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর ফরিদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন আদালতে সাতজনের নামে অভিযোগপত্র জমা দেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, দণ্ডবিধি ১৮৬০ সালের ৩৯৬ ধারায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন ও একই আইনের ৪১২ ধারায় একজনকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।

জহির হোসেন/এএমকে