জয়পুরহাটে যাত্রাবিরতির দাবিতে ট্রেন থামালো ছাত্র-জনতা
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি রেলওয়ে স্টেশনে খুলনা ও ঢাকাগামী আন্তঃনগর দুটি ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে ট্রেন থামিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী উপজেলার সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পাঁচবিবি রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন এবং রাজশাহীগামী বরেন্দ্র, তিতুমীর ও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রাবিরতি দেয়। এই ট্রেনগুলোর মধ্যে ঢাকাগামী দুই ট্রেনে ৫৫ আসন ও রাজাশাহীগামী দুই ট্রেনে মোট আসন ৪০। কিন্তু এই স্টেশন থেকে খুলনাগামী কোনো ট্রেনের বিরতি নেই। তাই তারা চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী রুপসা এক্সপ্রেস ও নীলফামারী থেকে ঢাকাগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বিরতির জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। তারপরও দাবি মানা হয়নি। এরপর ওই উপজেলার সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা বিক্ষুদ্ধ হয়ে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় মানববন্ধন করেন।
বিজ্ঞাপন
এ সময় চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী রুপসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুপুর পৌনে ১২টায় পাঁচবিবি রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ট্রেনটি থামিয়ে দেন। পরে তারা রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার দাবির কথা জানানো হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আশ্বাসে ট্রেনটি ১টা ৫৪ মিনিটে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে এই রুটে চলাচলকারী কয়েকটি ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঘটে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পাঁচবিবি আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নুল আবেদীন, উচাই জেরকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফরহাদ আলম জুয়েল, মেহেদী হাসান, এনএম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নাসরিন আকতার, পাঁচবিবি বণিক সমিতির সভাপতি তাইজুল ইসলাম, শিক্ষার্থী ইব্রাহিম হোসেন, রেজুওয়ান হোসেন, আলিফ হোসেন প্রমুখ।
এতে উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, ব্যবসায়ী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই উপজেলায় দুই লাখের বেশি মানুষের বসবাস। এই মানুষগুলোকে খুলনা ও ঢাকায় যেতে হয়। কিন্তু যাতায়াতের জন্য শুধু ঢাকার রুটে দুই ট্রেন বিরতি দেয়। এ কারণে অনেককে জয়পুরহাট স্টেশনে গিয়ে তাদের ট্রেনে চড়তে হয়। তাছাড়া খুলনাগামী কোনো ট্রেনের বিরতি নেই। এখানে দাবিকৃত এই দুই ট্রেন বিরতি দিলে পার্শ্ববর্তী দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি), গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মানুষও সুবিধা পাবে। আবার এখানে অনলাইন টিকিট সিস্টেমও চালু নেই। এ কারণে অনলাইন টিকিট সিস্টেম চালু করাসহ খুলনা ও ঢাকায় চলাচলকারী রুপসা এবং নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন বিরতির দাবি জানান তারা।
পাঁচবিবি রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী এনায়েতুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুটি ট্রেন যাত্রাবিরতির দাবিতে ছাত্র-জনতা মানববন্ধন করেছেন। এ সময় রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন স্টেশনে দাঁড়িয়ে যায়। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর প্রায় দুই ঘণ্টা পর ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে যায়। আজ বিকেলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসা হবে। আর অনলাইন টিকিট সিস্টেম এই মাসে চালু হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
চম্পক কুমার/আরএআর