বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ফরিদপুরে ৩৬ ঘণ্টায় ১৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। এ ছাড়া ফরিদপুর শহর ছাড়া জেলার ৯টি উপজেলায় ৪০ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রোববার বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২৬ থেকে ২৭ কিলোমিটার। এদিকে বৃষ্টিতে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ সেন্টিমিটার বাড়লেও বিপৎসীমার ১ দশমিক ৮২ মিটারের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বৃষ্টির কারণে ফরিদপুর শহরের থানা রোড, সিভিল সার্জন অফিসের সামনে, ফলপট্টি, সোনালী ব্যাংকের সামনেসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া জেলার ৭০০ গ্রাম বিদুৎবিহীন রয়েছে ৪০ ঘণ্টা ধরে।

ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, গ্রিড বিপর্যয় এবং টানা বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঝড়ো বাতাসের কারণে বিদ্যুৎ লাইনের ওপর গাছপালা পড়ায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। গ্রিড বিপর্যয়ের মেরামত কাজ চলাকালীন পুনরায় বৃষ্টিপাত শুরু হলে ৪০ ঘণ্টা পার হলেও জেলার ৮১টি ইউনিয়নের প্রায় ১৭০০ গ্রামে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। 

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার বাউতিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জোবায়ের হোসেন (৩২) বলেন, বৃষ্টিতে ৪০ ঘণ্টা ধরে কারেন্ট নাই। ফ্রিজের খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই যুগে এসে এত দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎবিহীন থাকাটা একটা অসহনীয় যন্ত্রণার।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, জেলায় ৭৯ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষাবাদ হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে কয়েকটি উপজেলায় ঘুরে যেটা দেখেছি, সেখানে সাড়ে ৬০০ হেক্টর ধানের জমি বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বৃষ্টি শেষ হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারব। 

ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুর রহমান বলেন, টানা ঝড়ো বৃষ্টির কারণে গাছপালা ও বিদ্যুতের পিলার পড়ে গেছে অনেক জায়গায়। দ্রুত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা।

জহির হোসেন/এএমকে