বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেছেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখনো চলমান রয়েছে। একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী নওগাঁ জেলাতে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে- এমন তথ্য পেয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। যদি আবারও প্রয়োজন হয় ছাত্রসমাজ একত্র হয়ে এসব সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের প্রতিহত করবে।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং শহীদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

ছাত্রসমাজকে প্রতিপক্ষ ভাবলে জনগণ ওইসব রাজনৈতিক দলকে প্রত্যাখ্যান করবে উল্লেখ করে মাহিন সরকার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে যে কোনো রাজনৈতিক দলের আসার অধিকার আছে। তারা এসে শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের মতামত দিতে পারে। কিন্তু শহীদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলায় সাক্ষাত করতে গেলে আমাদেরকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যেসব রাজনৈতিক দল এসব করছে, এদেশের জনগণ তাদের ছুড়ে ফেলতে দুবারও ভাববে না।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রৈর কাঠামো সঠিকভাবে পুনর্গঠন করতে না পারলে বিপ্লবের ইতিহাস একটি রাজনৈতিক দখল করে নেবে। ইতোমধ্যে একটি দল তাদের সঙ্গে আপস করার জন্য বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এছাড়াও আমাদের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ছাত্রসমাজ কখনোই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করবে না। ফ্যাসিস্টদের সকল পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হবে।

মাহিন সরকার আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা শত শত মানুষকে গুম করেছিলেন। আয়নাঘরে রেখে নির্যাতন করেছেন। এখনো অনেকে গুম হয়ে আছেন। এই ঘটনাগুলোর মূল কারণ তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতো। এমন ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেই দায়িত্ব ছাত্রজনতার। ফ্যাসিস্ট হাসিনার মতো আর কোনো হাসিনা যাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় না আসে ঐক্যবদ্ধভাবে তা রুখে দিতে হবে ছাত্র-জনতাকে।

মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে রাজশাহী বিভাগীয় ছাত্র নাগরিক মৈত্রী সফরের সদস্য কুররাতুল আইন কানিজ, সাইফুল ইসলাম, ইফতেখার আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শেখ ফাহমিনের মা লুলুল মাখমিনসহ আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন। 

এ সময় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নওগাঁ জেলায় নিহত ১১ জন ও আহত ২৩ পরিবারের সদস্য, জেলা ও উপজেলার সমন্বয়ক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
 
আরমান হোসেন রুমন/আরএআর