সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক নারীকে মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এক নারীকে কান ধরিয়ে ওঠবস করাচ্ছে একদল অতিউৎসাহী জনতা। তাদের তোপের মুখে পড়া ওই ভুক্তভোগী নারী কানে হাত দিয়ে ওঠবস করতে অপারগতা প্রকাশ করছেন। কিন্তু, সেখানে উপস্থিত এক যুবক লাঠি দিয়ে ওই নারীকে একাধিকবার আঘাত করেন। সেই লাঠির আঘাত থেকে রক্ষা পেতে ভুক্তভোগী নারী কান ধরে ওঠবস করছেন। শুধু তাই নয়, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জনতা ওই নারীর কান ধরে ওঠবসের গণনাও করছিলেন। এ ঘটনাটি কক্সবাজারে ঘটেছে বলে জানা গেছে।

ভিডিওতে মারধর করা যুবকটির নাম ফারুকুল ইসলাম। তার বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকায়।

এ ঘটনার পর সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। শুরু হয় নিন্দার ঝড়। এমন ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে কক্সবাজারের সচেতন মহল বলছে, একজন মানুষ যত অপরাধই করুক না কেন তার জন্য আইন আছে। তবে একজন নারীকে পেটানোটা ঠিক হয়নি।

জাহাঙ্গীর আলম সামস নামে একজন সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, কক্সবাজারে কেউ নামাজ পড়তে আসে না। একজন নারীকে পেটানোটা ঠিক হয়নি।

রফিকুল ইসলাম নামের আরেক যুবক লিখেছেন, এই যুবককে এই ক্ষমতা কে দিয়েছে। এই বিচ কারো বাপের না। 

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার হচ্ছে পর্যটন শহর। এখানে মানুষ আসে সমুদ্র উপভোগ করার জন্য বিনোদনের উদ্দেশ্যে আসে। দেশি বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেমন কক্সবাজার থেকে প্রথম ট্যুরিস্ট পুলিশের যাত্রা শুরু হয়েছিল তেমনি সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে পর্যটন আর পর্যটকদের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কিন্তু ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় একদল যুবক সমুদ্র সৈকতে নারী পর্যটকদের  ওপর যেভাবে হামলা মারধর করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে তা দুঃখজনক।

তিনি বলেন, এটি শতভাগ পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এমনিতেই কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের অবস্থা বিগত কয়েক বছর ধরে খারাপ যাচ্ছে, তারমধ্যে নারীদের ওপর এমন আচরণ প্রচার হলে নিরাপত্তার অভাবে পর্যটক কক্সবাজারের পরবর্তীতে ভিন্ন কোনো স্পট খুঁজে নেবে।

টুরিস্ট পুলিশ সূত্র বলছে, চলতি বছরে পর্যটক হয়রানি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, প্রতারণাসহ নানা অভিযোগে শতাধিক আটক হয়েছে।

তবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের পর্যটক সেলের ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন দাবি করেন, ভিডিওটা সাম্প্রতিক সময়ের নয়, অনেক আগের।

তিনি জানান, বিষয়টি নজরে আসলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করলে অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম জানান, এই ঘটনাটি আমরা জানতে পেরেছি। ঘটনার তদন্ত চলছে।

সাইদুল ফরহাদ/পিএইচ