জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ.টি.এম মাসুম বলেছেন, আওয়ামী লীগের জন্মটাই হয়েছে ইসলাম বিদ্বেষের ওপর। তারা ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, সেটাই গত ১৫ বছর মানুষের কাছে তুলে ধরেছে। তারা জামায়াতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এমন আচরণ করেছে যেই আচরণ পশুও পশুর সঙ্গে করতে পারে না।

তিনি বলেন, তারা আমাদের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে মিথ্যা বিচারপতি দিয়ে ফাঁসি দিয়েছে। এ দেশের মানুষের কাছে তাদের অপকর্ম অত্যন্ত পরিষ্কার।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন এ.টি.এম মাসুম।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঝড়ে আওয়ামী লীগ অপশক্তিকে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। বাংলাদেশ শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানরাও আছে। তারা আলাদা কোনো নাগরিক নয়, তারাও বাংলাদেশের নাগরিক। এখানে তারাও জন্ম নিয়েছেন। আমরা মুসলমানরা তাদেরকে সমান অধিকার দিয়ে সম্মিলিতভাবে মিলেমিশে এ দেশে বসবাস করতে চাই। আমরা কারো দাদাগিরিকে মেনে নেব না। কারো পরিকল্পনা আমরা এখানে বাস্তবায়ন হতে দেব না।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আপনারা এমন নেতাদের পেছনে ঘুরলেন যারা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বললেন দল ও দেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব নেই। আমরা ধিক্কার জানাই যারা প্রাচীন দল হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। যারা এই রকম দেশ, দলের কর্মী এবং জনগণের সঙ্গে তামাশা করেছেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশকে নিয়ে যে দায়িত্বহীন বক্তব্য দিয়েছেন, এই বক্তব্যের কারণে শুধু গণহত্যা নয় এই দেশ, এই সমাজ এবং এই পৃথিবী যতদিন থাকবে আপনারা আর কোনো আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করতে পারবেন না।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যখন এই আন্দোলনকে কোনোভাবেই দমন করা যাচ্ছে না, তখন তারা ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম এবং ছাত্র শিবির নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে। শেখ হাসিনা বিগত ১৫ বছর আমাদের কোনো উপকার করতে পারে নাই। কিন্তু ১ আগস্ট জামায়াত ইসলামকে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে আপনি (শেখ হাসিনা) একটা উপকার করে দিয়ে গেলেন। এই ২০২৪ সালে নিষিদ্ধের মাধ্যমে এই আন্দোলনের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে জামায়াতকে আপনি চিহ্নিত করে দিয়েছেন। এটাই প্রমাণিত হয়েছে ছাত্রসমাজ জামায়াত ইসলাম এবং ছাত্র শিবিরকে বুকে ধারণ করে বিজয়ের পতাকা উত্তীর্ণ করেছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আমিরের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা দক্ষিণের আমির মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, নারায়ণগঞ্জ জেলার আমির মমিনুল হক সরকার প্রমুখ।

মেহেদী হাসান সৈকত/এসএসএইচ