নিক্সন ও ভাঙ্গা থানার সাবেক ওসিসহ ৯৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ফরিদপুর আদালতে দ্রুত বিচার আইনে ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী ও ভাঙ্গা থানা পুলিশের সদ্য সাবেক ওসি মামুন আল রশিদসহ ৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন ভাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক (পরে বহিষ্কৃত) মো. সাইদুর রহমান সিকদার মিঠু (৪৭)।
সাইদুর রহমান সিকদার মিঠু ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লার মো. শাহজাহান সিকদারের ছেলে। গত ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করা হলেও আজ শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জানা যায়।
বিজ্ঞাপন
ফরিদপুর জজকোর্টের আইনজীবী জসীম উদ্দিন মৃধা জানান, দ্রুত বিচার আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাসিম মাহমুদ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ৯৮ জন। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীকে (৪৮)। মামলার প্রথম ১০ জন আসামি হলেন- ফরিদপুরের সদ্য সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহদাত হোসেন (৬০), সদ্য সাবেক ভাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান কাউসার ভূঁইয়া (৬০), ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান (৫৫), ভাঙ্গা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মুন্সী (৬৫), ভাঙ্গা পৌরসভার নিক্সন সমর্থিত সাবেক মেয়র প্রার্থী ইসমাইল মুন্সী (৪০), ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাইজুর রহমান (৬০), নিক্সন সমর্থিত সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানপ্রার্থী মেহেদী পারভেজ চন্দন (৪২), ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোবাহান মুন্সী (৫০) ও ভাঙ্গা থানা পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ।
মামলায় প্রথম নয়জনকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। আর ওসির বিরুদ্ধে বাকি আসামিদের সঙ্গে নিয়ে গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০০২ সালের আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ দ্রুত বিচার আইনের ৪/৫ তৎসহ দণ্ডবিধির ৩২৩/৩২৫/৩০৭/০৪ ধারা এবং ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩/৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৩ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে ভাঙ্গার গোল চত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ অবস্থানে নিক্সন-শাহদাতসহ অন্য আসামিদের নির্দেশে হত্যার উদ্দেশ্যে নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের ওপর আসামিরা ককটেল, হাতবোমা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করায় বাদীসহ অনেক নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা ও সাধারণ পথচারী আহত হন। এ সময় ওসি মামুন আল রশিদ তাদের ওপর ১০০ রাউন্ড গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
তবে মামলার আসামি ভাঙ্গা থানা পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযোগটি কাল্পনিক ও মিথ্যা। হয়রানি করার জন্য করা হয়েছে। আমি বাদীকে চিনিও না। ১০০ রাউন্ড গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে এটা মিথ্যাচার। ভাঙ্গা থানায় গুলি ও কাঁদানে গ্যাস রক্ষিত আছে। পুলিশ এক রাউন্ড গুলি ছুড়লে পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা করতো। আসলে গোল চত্বরে এ জাতীয় কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
জহির হোসেন/এমজেইউ