১ মাস ৮ দিন লড়াই করে না ফেরার দেশে মাথায় গুলিবিদ্ধ পারভেজ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন লক্ষ্মীপুরের যুবক পারভেজ হোসেন (২২)। দীর্ঘ ১ মাস ৮ দিন লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে রাজধানী ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। রাত ১০টার দিকে নিহত পারভেজের চাচা মহিন উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞাপন
নিহত পারভেজ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ধন্যপুর গ্রামের মিন্নত আলী হাজী বাড়ির মো. নবী উল্যা ও ফাতেমা বেগমের বড় ছেলে। তিনি ঢাকা মিরপুর ১০ নাম্বারের সেনপাড়া থাই গ্লাসের কাজ করতেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মিরপুর ১০ নাম্বার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পারভেজ মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই দিন রাতেই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালের তার মাথায় অস্ত্রোপচার (অপারেশন) করা হয়। হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত পারভেজের চাচা মহিন উদ্দিন বলেন, পারভেজ কর্মঠ ছিল। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সে বড় ছিল। তার বাবা মানসিক রোগী৷ এ জন্য চতুর্থ শ্রেণিতেই তার পড়ালেখা শেষ হয়ে যায়। এরপর এলাকায় বিভিন্ন কাজকর্ম করে পরিবারের হাল ধরে। ৭ বছর ধরে মিরপুরে গিয়ে সে থাই গ্লাসের কাজ করতো। তার উপার্জনের টাকায় তাদের সংসার চলতো। পারভেজের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে পরিবারটি।
মহিন উদ্দিন আরও বলেন, পারভেজের মরদেহ পুলিশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে নিয়ে যাচ্ছি। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে চন্দ্রগঞ্জের কামারহাট ঈদগাহ ময়দানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ঢাকার কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, পারভেজের মাথার বাম পাশে গুলি লেগেছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। শহীদ সোহরাওয়র্দী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। পারভেজের মরদেহটি পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে তার মৃত্যুর ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএসএ