রাজবাড়ীতে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে ডাকা বিএনপির প্রতিবাদ সভায় অপর গ্রুপের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে দোকান, মোটরসাইকেল, চেয়ার, মাইক ভাঙচুর করাসহ মারধরে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী বাসস্ট্যান্ড বাজারে প্রতিবাদ সভা চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত মো. কামরুল শেখ (৩৮), শামীম (২৪), আরাফাত ইসলাম রাফি (১৮), শসী (১৯) ও হাছানকে (৩৫) রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি, দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে চন্দনী ইউনিয়ন বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আয়োজনে প্রতিবাদ সভা ও শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তব্য চলাকালে ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একটি পক্ষ হামলা চালায়। হামলায় টুকুর হোটেল, সভার চেয়ার, মাইক, ১০-১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করাসহ লোকজনকে মারধর করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তাৎক্ষণিক হামলার প্রতিবাদে বক্তব্য দেন রাজবাড়ী জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব একেএম সিরাজুল আলম চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, চন্দনী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহীন, চন্দনী বাজার বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসহাক ফকিরসহ অন্যান্যরা। পরে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, চন্দনী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মালেক শিকদার এবং তার ভাইয়ের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। আমরা হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।

রাজবাড়ী জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব একেএম সিরাজুল আলম চৌধুরী বলেন, রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি, দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও চন্দনী ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে শান্তিপূর্ণ সভা আহ্বান করা হয়। আমি বক্তব্যে প্রদানকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে এসে হামলা, ভাঙচুর, মারধর করে চলে যায়। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসহ বিএনপির অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইফতেখারুল আলম প্রধান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করি। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমজেইউ