নারায়ণগঞ্জে বিএনপির মিছিলে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি বিএনপির নেতাকর্মীদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফতুল্লায় মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিএনপি ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় মাসুদ ওরফে ওলা মাসুদ নামে এক যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীরা ওই মিছিলে গুলিবর্ষণসহ হামলা করেন।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফতুল্লার বটতলা এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পাল্টা ধাওয়া দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি বিএনপির নেতাকর্মীদের। হামলায় গুরুতর আহত ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিনসহ অন্যান্যদের শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে এলাকাবাসী ও ফতুল্লা থানা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি রেললাইন বটতলা এলাকায় পৌঁছালে পূর্ব বিরোধের জের ধরে যুবলীগ নেতা ওলা মাসুদ ও সুমন দলবল নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিলে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এসময় মিছিলকারীরা তাদের ওপর ইট পাটকেল ছুঁড়লে দুপক্ষের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।

এতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন ফতুল্লা থানা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিনসহ অন্তত ২০ জন। খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধাওয়া করে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু বলেন, বিকেল ৩টার দিকে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এলাকা থেকে মাদক, সন্ত্রাস দূর করতে একটি শান্তি মিছিল নিয়ে বের হয়। এসময় শামীম ওসমানের লোক আলাউদ্দিন হাজীর ছেলেরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা, গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। কী কারণে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর এমন বর্বর হামলা করল সেটি আমার জানা নেই।

ওলা মাসুদ ও সুমনের দাবি, একদল সন্ত্রাসী এসে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করেছে।

হামলায় আহত ফতুল্লা থানা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন জানান, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে কুতুবআইলের কাঠেরপুল থেকে মিছিল নিয়ে বের করে তারা রেললাইন বটতলার দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় যুবলীগ নেতা ওলা মাসুদ ও সুমন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাদের মিছিলের ওপর হামলা চালায় ও ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে।

রবিন বলেন, হামলায় আমাদের প্রায় ২০ জন মারাত্মক আহত হয়েছে। এরপর হামলাকারীরাই কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ঘটনায় আমরা মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেব।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান মাহমুদ আমাদের সময়কে বলেন, বিকেলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। পরে পুলিশ গিয়ে ধাওয়া দিয়ে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। হামলা বা সংঘর্ষকারীদের দলীয় পরিচয় সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করা হবে। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেহেদী হাসান সৈকত/পিএইচ