ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশেই লুকিয়ে ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। তবে হঠাৎ করে লালমনিনহাটের পাটগ্রাম উপজেলার চোরাকারবারিদের সহায়তায় তিনি দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। 

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাচারকারীদের এ সংক্রান্ত কয়েকটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে।

এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্র্যাক ব্যাংকের পাটগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক পঙ্কজ কুমার মদন নামে এক ব্যক্তিকে পাটগ্রাম শহর থেকে গত সোমবার ( ৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে তাকে পাটগ্রাম থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেন স্থানীয়রা। 

রাতভর পঙ্কজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় বিজিবি ৫১ রংপুর ব্যাটালিয়নের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও খতিয়ে দেখছেন বলে জানা গেছে।

পাটগ্রাম থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুরে টাকা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন শুভ নামে এক চোরাকারবারি। তিনি দহগ্রামের ডাঙ্গাপাড়া ওলেরপাড় এলাকার ওসমান গণির ছেলে। 

কথা বলার একপর্যায়ে শুভ বলেন, সোমবার রাতে পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকারকে দহগ্রাম সীমান্ত পথ দিয়ে ভারতে পার করে দেওয়া হয়। ব্র্যাক ব্যাংকের পঙ্কজ ও দহগ্রামের আকছেদুল, মমিন, লম্বা শাহীন, ফারুক, রাজিব, শামীম ও মকছেদুলের সহায়তায় বিপ্লবকে পার করা হয়। জলঢাকা মীরগঞ্জের মিঠু, নিশাদ, রুবেল বিপ্লবকে পাটগ্রামে আনতে সহায়তা করে। সীমান্ত পার করার সময় দেড় লাখ টাকা নেওয়া হয়। 

এ ধরনের কয়েকটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ালে শুভ ও তার বাবা ওসমান গণির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।  

এ ব্যাপারে পাটগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। বিজিবিও তদন্ত করছে। ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে শর্ত সাপেক্ষে মুচলেকা নিয়ে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে যখনই ডাকা হবে তিনি তখনই আসবেন। পুরো বিষয় তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরএআর