‘স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা পালানোর পর স্বৈরাচারী ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত এখনো শেষ হয়নি। বিদেশি অপশক্তির প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চলছে। সাস্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করারও নানা চক্রান্ত চলছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি প্রতিবাদী আর বিপ্লবী মনোভাব ধরে রাখতে হবে। আর ক্ষমতায় চলে আসছেন মনে করে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব ও নৈরাজ্য যারা করছেন তাদের পরিণতিও শেখ হাসিনার মতো হতে পারে। শিক্ষার্থীরা তাদেরকেও শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।’ 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে ছাত্র নাগরিক সাধারণ সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা এসব কথা বলেন। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাবনার উদ্যোগে আয়োজিত সভা কোরআন তেলাওয়াত ও জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়। পরে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা। সভায় বক্তব্য দেন, পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সদ্য বিদায়ী অধ্যক্ষ ড. মো. মাহবুব সরফরাজ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মীর খালেদ ইকবাল চৌধুরী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাহিন সরকার, কুররাতুল আইন কানিজ, সাইফুল ইসলাম, ইফতেখারুল আলম আসাদ, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মেহেদি, আল রাকিব, ঐশিক মণ্ডল জয়, আবু ওবায়দা উসামা, পাবনায় গুলিতে নিহত মাহবুব হাসান নিলয়ের বাবা আবুল কালাম আজাদ, নিহত জাহিদুল ইসলাম জাহিদের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

সমন্বয়করা বলেন, ক্ষমতায় এসে গেছি মনোভাব নিয়ে একটি গোষ্ঠী চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব করছে। সেটা এখনো বন্ধ হচ্ছে না। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মতো একসাথে এদের প্রতিহত করবে। এখন আপনার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল ও চাঁদাবাজি করছেন, ১৬ বছর আপনারা কোথায় ছিলেন। মামলা নিয়ে একটি মহল ব্যাপক বাণিজ্য করতে মাঠে নামছে। আপনারা যদি আগের স্বৈরশাসকের মতো শুরু করেন তাহলে আপনাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। শিক্ষার্থীদের মতের বিরুদ্ধে যাবেন না, এর ফলাফল ভালো হবে না। 

তারা বলেন, ১৬ বছর ধরে যে ফ্যাসিস্ট কার্যক্রম চলছে তা এতে সহজে দূর হবে না। প্রতিটি জায়গায় ফ্যাসিস্টদের দোসর রয়েছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র নানাভাবে চক্রান্ত করছে। ভারতে বসে শেখ হাসিনা নানা ষড়যন্ত্র করছে। একেক সময় একেক লীগ নামে রাস্তায় নামছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিহত করেছে। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। 

সমন্বয়করা বলেন, সংবিধান পরিবর্তন করা দরকার। জনগণ চাইলে সংবিধান পরিবর্তন সম্ভব। কারণ জনগণের জন্যই সংবিধান।

এর আগে সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথসভায় মতবিনিময় করেন সমন্বয়করা। পরে তারা পাবনায় ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত দুই শিক্ষার্থী জাহিদ ও নিলয়ের কবর জিয়ারত করেন।

রাকিব হাসনাত/আরএআর