মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় প্রখ্যাত কবি ও ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটেবাড়ি দখলে নেওয়ার তিন দিন পর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে প্রশাসন। এ সময় আগের দেওয়া তালা ভেঙে নতুন করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। তবে দখলদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় পুলিশ ও সেনা সদস্যের উপস্থিতেতে বাড়িটি দখলমুক্ত করা হয় বলে জানান কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ। 

এর আগে শনিবার দুপুরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটেবাড়ি দখলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে ডাসার উপজেলা বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক সোহেল হাওলাদারের বিরুদ্ধে।

ডাসার ও কালকিনি উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয়রা জানান, কালকিনি উপজেলা ভেঙে নবগঠিত ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া মৌজায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাত একর ১৫ শতাংশ পৈতৃক জমি রয়েছে। এসব জমির মধ্যে দুই একর ৯৭ শতাংশ জমি সরকারের খাসজমি হিসেবে রেকর্ড।

শনিবার দুপুরে লেখকের পৈতৃক ভিটার একটি টিনশেড ঘরের (সুনীল স্মৃতি পাঠাগার) তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন বিএনপি নেতা সোহেল হাওলাদার ও তার লোকজন। পরে তারা লেখকের ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি, বই, আসবাব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ একাধিক ছবি ভাঙচুর করেন। এরপর তারা ওই ঘরে ওএমএসের প্রায় এক ট্রাক চাল রেখে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেন। এ ছাড়া লেখকের বাড়ির সামনে জেলা প্রশাসক কর্তৃক লাগানো একটি সাইনবোর্ডও ভেঙে সরিয়ে ফেলা হয়। 

এ নিয়ে সোমবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান জেলার সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাহিত্যপ্রেমীরা। পরে সোমবার রাতে জেলা প্রশাসন থেকে লেখকের বাড়িটি পুনরুদ্ধারের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যদের নিয়ে লেখকের বাড়ি পরিদর্শনে যান ইউএনও উত্তম কুমার দাশ। এ সময় উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবা ইসলাম, ডাসার থানার ওসি এস এম শফিকুল ইসলাম এবং কাজীবাকাই ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও উত্তম কুমার দাশ বলেন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটা ও জমি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে প্রশাসন। লেখকের ঘরে নতুন তালা লাগানো হয়েছে। এই জমিতে অনুমতি ছাড়া কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য সতর্ক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপির ওই নেতার বিরুদ্ধে  এখনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরএআর