সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আর একমাস বাকি। তাই তড়িঘড়ি করে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। দিন রাত সমানতালে কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, মহাষ্টমী পালিত হবে ১১ অক্টোবর। মহানবমী পালিত হবে ১২ অক্টোবর। বিজয়া দশমী পালিত হবে ১৩ অক্টোবর। এদিন বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়িতে বাড়িতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। নগরীর আলুপট্টি এলাকায় প্রতিমাশিল্পী কার্তিক কুমারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। পাশে তার শ্রমিক কাদামাটি প্রতিমার গায়ে লাগাচ্ছে। তার স্ত্রী প্রতিমায় পোশাক পরচ্ছেন। একই সঙ্গে চলছে রঙের কাজও।

প্রতিমা কারিগর চিরঞ্জিত রায় বলেন, প্রতিমায় মাটি দেওয়ার কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রতিমায় যে ডিজাইনগুলো লাগানো হয়েছে সেগুলো দেখা হচ্ছে। কোনো সমস্যা থাকলে পরিবর্তন করা হবে। এর পর রঙের কাজ শুরু হবে। একেকটি প্রতিমায় রং করতে দুই দিন সময় লাগে। যেহেতু হাতে সময় কম। তাই দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে।

আরেক শিল্পী কার্তিক কুমার বলেন, এ বছর প্রতিমার অর্ডার কম। গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০টি অর্ডার কম পেয়েছি। পূূজা কমিটি এসে প্রতিমা দেখে যাচ্ছেন। প্রতিটি প্রতিমা তৈরিতে বিগত বছরের তুলনায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। সেই হিসাবে দাম দিতে চাচ্ছেন না পূজা কমিটির লোকজন।

তিনি আরও বলেন, পূজার দুই মাস আগেই প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছি। নতুবা সময় মতো প্রতিমা ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হবে না। সামনে বিশ্বকর্মা পূজা আছে। এরপরে বোঝা যাবে প্রতিমার অর্ডারের বিষয়ে। তবে কয়েকদিন পর আমরা পুরোদমে প্রতিমায় রঙের কাজ শুরু করব।

রাজশাহী হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ জানান, পালদের বাড়িতে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। এ নিয়ে শিল্পীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তবে এখনো জানা যায়নি এ বছরর কতটি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব মণ্ডপের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে এবার কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপিত হবে।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী জেলায় গত বছর ৪৬৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে জেলায় ৩৮৯টি ও মহানগরীতে ৭৯টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

শাহিনুল আশিক/এমএ