শেখ মুজিবুর রহমানের বিকৃত ছবিতে মন্তব্য করায় ৪ মাস কারাবন্দী ও চার বছর পড়াশোনা বন্ধ থাকা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফয়েজ আহমেদ নামের সেই শিক্ষার্থী প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগপত্র নিয়ে হাজির হয়েছেন। 

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযোগপত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইলের নিকট জমা দেন তিনি। এসময় পাশে তার থাকার আশ্বাস দেন উপাচার্য।

জানা যায়, ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর মুহম্মদ মুমিন আদ দ্বীন নামক একটি আইডি থেকে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামক একটি গ্রুপে নোবিপ্রবির বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সঙ্গে ভিপি নুরের এডিট করা ছবি পোস্ট করা হয়। সেই পোস্টের সমালোচনা করে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি শাহরিয়ার নাসের পোস্ট করেন। সেখানে ফয়েজ আহমেদ কমেন্ট করেন, ‘এখানে দুঃসাহসের কিছু তো দেখছি না’। এই একটি কমেন্টের কারণে ফয়েজ আহমেদকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তাকে পাঁচদিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে দীর্ঘ চার বছর ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত করা হয়। 

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে অঝোরে কাঁদেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদ।

ফয়েজ আহমেদের বড় ভাই রাজু আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার চেয়ে উপাচার্য স্যার বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে নোবিপ্রবি আইন বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। স্যার আশ্বাস দিয়েছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আমরা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিচার চাই।

অভিযোগপত্র পাওয়ার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বলেন, আজকে আমরা কয়েকজন শিক্ষকসহ ফয়েজের কথা শুনেছি। তার ভাইসহ তার সহপাঠীদের কথাও শুনেছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার পাশে থাকবো। ফয়েজের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। পাশাপাশি তার ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে সোমবার দুপুরে ৫ দফা দাবি নিয়ে মানববন্ধন করে ফয়েজের সহপাঠীরা৷ 

দাবিগুলো হলো, ২৪ ঘণ্টার ভেতর তদন্ত কমিটি গঠন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা,  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফয়েজকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান ও অভিযুক্তদের তদন্তকালীন সময়ে স্ব স্ব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ কোনো প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান। 

এ বিষয়ে ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপাচার্য মহোদয় শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। তবে সব কিছুর একটা নিয়ম আছে। সেসব নিয়মের মধ্যে থেকে প্রশাসনের সর্বোচ্চটা করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। 

হাসিব আল আমিন/এমএসএ