নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ কিশামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে পরিবারের সদস্যদের অবৈধ নিয়োগ ও দুর্নীতির অভিযোগে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলার কিশামত বীরচরন গ্রামের বাসিন্দা মো. আইয়ুব আলীর পক্ষে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া।

এর আগে ২ সেপ্টেম্বর নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থেকে আয়া পর্যন্ত একই পরিবারের ১৭ জন কর্মরত রয়েছেন- এমন একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। পরে এ নিয়ে নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট একটি সংবাদ প্রকাশ করে।

নোটিশে অভিযোগ করা হয়েছে, কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচন্ডি ইউনিয়নের কবিরাজের বাজারে অবস্থিত কিশামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রায় এক একর জমির ওপর ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করা হয় ২০০২ সালে। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে জমিদাতা কুলোদা মোহন রায়কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন করা হয়। তৎকালীন সভাপতি কুলোদা মোহন রায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে অনন্ত কুমারকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার নিয়োগ পাওয়ায় পর প্রতিষ্ঠানে নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের স্ত্রী, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজনকে নিয়োগ পাইয়ে দেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কুলোদা মোহন রায়ের মৃত্যুর পর প্রধান শিক্ষক নিজের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির ছেলে বিমল চন্দ্র রায়কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্বে নিয়ে আসেন। বিপুল চন্দ্র কমিটির সভাপতি হওয়ার পর সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক দুজনে মিলে দুই পরিবারের লোকজনদের নিয়োগ দেন।

অভিযোগ অনুসারে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতির মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, বিদ্যালয়ের ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে মাত্র একজন মুসলিম এবং বাকি সবাই সনাতন ধর্মের অনুসারী, যা প্রাপ্য মুসলিম প্রার্থীসহ অন্যান্য যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করেছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর ‘এক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক থেকে আয়া সবাই একই পরিবারের’ এবং ‘এক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ একই পরিবারের ১৭ জনের চাকরি’ শিরোনামে এ বিষয়ে ঢাকা পোস্টসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গুরুতর অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এত বড় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এখনো কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি বা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত ৫ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে বেশ কয়েকটি আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, যদি দ্রুত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তবে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করা হবে এবং এর জন্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে।

শরিফুল ইসলাম/এমজেইউ