দেশ ছেড়ে পালানো সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলার অভিযোগে করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির ১২ নেতাকর্মী জামিনে মুক্ত হয়েছেন। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পাবনা জেলা কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। জেল সুপার মো. নাসির উদ্দিন প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে বিকেল থেকেই পাবনা জেলা কারাগারের সামনে জড়ো হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সন্ধ্যার দিকে তাদের মুক্তি দেওয়া হলে নেতাকর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পরে পাবনা জেলা বিএনপির কার্যালয়ে তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও সদস্য সচিব মাসুদ খন্দকারসহ জেলার শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

কারামুক্তরা হলেন- আলাউদ্দিন বিশ্বাস, ইসলাম হোসেন জুয়েল, আনোয়ার হোসেন জনি, ইঞ্জিনিয়ার মুক্তার হোসেন, মোহাম্মদ বরকত, হাফিজুর রহমান মুকুল, আবুল কাশেম, সিমুয়া শামসুর রহমান, মোহাম্মদ লিটন মাল, ফয়সাল রিজিয়া রনো, মোহাম্মদ এনাম এবং আজাদ হোসেন খোকন।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিজয়-৭১ এর ১১ আদালতের দ্বৈত বেঞ্চের বিচারপতি এএসএম আব্দুল মবিন ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদার ঈশ্বরদীর কারাবন্দি ৪৭ বিএনপি নেতাকর্মীর মধ্যে ৩০ নেতাকর্মীকে জামিন দেন।

জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- আমিনুল ইসলাম আমিন, আজাদ হোসেন খোকন, ইসমাইল হোসেন, আলাউদ্দিন বিশ্বাস, শামসুর রহমান শিমুয়া, আনিছুর রহমান ওরফে সেকম, নুরুল ইসলাম আক্কেল, মো. রবি, এনাম, আবুল কাশেম, কালা বাবু, মামুন, মমিন ওরফে মামুন, সেলিম আহমেদ, কল্লোল, তুহিন, শাহ আলম লিটন, আবদুল্লাহ আল মামুন, তাহাজুল ইসলাম লাইজু, আবদুল জব্বার, পলাশ, আবদুল হাকিম টেনু, আলমগীর, আবুল কালাম আজাদ ও একেএম ফিরোজুল ইসলাম পায়েল। 

এছাড়া ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১৩ জনের জামিন মিলেছে। তারা হলেন- ইউপি চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান (ভিপি রাজু), আজমল হোসেন ডাবলু, আনোয়ার হোসেন জনি, রনো, বরকত আলী, চাঁদ আলী, এনামুল কবীর, মোক্তার, হাফিজুর রহমান মুকুল, হুমায়ুন কবীর দুলাল, জামনুল, তুহিন বিন সিদ্দীক ও ফজলুর রহমান প্রামাণিক।

৩০ বছর আগে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলায় ২০১৯ সালের ৩ জুলাই রায় দেন পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক রুস্তম আলী। এই রায়ে স্থানীয় বিএনপির মোট ৫২ জন নেতাকর্মীর মধ্যে ৯ জনকে ফাঁসি, ২৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সরকার পতনের পর ২৯ আগস্ট আপিল বিভাগের যৌথ বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। শুনানি শেষে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামি বাদে ১০ বছর সাজাপ্রাপ্ত ১২ জন ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৮ জনকে জামিন দেন আদালত। আজকে ১৩ জন মুক্তি পেলেন। বাকিরা রাজশাহী কারাগারে থাকায় তাদের আগামীকাল মুক্তি দেওয়া হতে পারে। বিচার চলাকালীন ৪ জন এবং রায়ের পর কারাগারে ৩ জন মারা গেছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন হুমায়ুন কবির দুলাল সরদার।

রাকিব হাসনাত/আরএআর