বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ০৪ আগস্ট নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় ১০টি ৯ এমএম পিস্তল, ২৬টি ম্যাগাজিন, ৪২০ রাউন্ড পিস্তল অ্যামোনিশন, ৪০ রাউন্ড রাইফেল অ্যামোনিশন এবং ৩২টি টিয়ার গ্যাস শেল লুট করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় যৌথবাহিনীর অভিযানে নেত্রকোণার পূর্বধলা থেকে নারীসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।

এ নিয়ে লুট হওয়া ১০টি অস্ত্রের মধ্যে ৯টি উদ্ধার করা হলো। এছাড়া একটি অস্ত্রের ভাঙা অবস্থায় অর্ধেক অংশ পূর্বধলার সোয়াই নদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের মাধ্যমে উদ্ধার করানো হয়েছে।

অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটকরা হলেন- পূর্বধলা উপজেলার জামাইকোণা গ্রামের মৃত হাজী তালেব আলী সরকারের ছেলে মো. আতাউর রহমান (৩৯), জালশুকা গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (২৩), গোহালাকান্দা গ্রামের আসাদুজ্জামানের ছেলে মো. সাব্বির হোসেন খান (১৮), মো. আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম (২৫), এবং ময়মনংসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মহিলাকান্দা গ্রামের মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস (২৬)। তার স্বামীর নাম ছোটন সরকার।

নেত্রকোণা অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের মেজর জিসানুল হায়দার জানান, এই অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে নেত্রকোণা সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সাজিদ বিন রওশনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালনা করেন পূর্বধলা ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন এ এম এন আকিব। এ সময় জেলা প্রশাসন থেকে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীত সরকার।

মেজর জিসানুল হায়দার আরও জানান, এ ঘটনায় লুটকৃত অস্ত্র, অ্যামোনিশন এবং অন্যান্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) থেকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব এবং আনসার সদস্যের সমন্বয়ে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) পূর্বধলা থানাধীন শ্যামগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন স্থানে রাতভর যৌথবাহিনীর অভিযান চলে। এতে সেখানে ব্যাপক জনমত এবং সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলশ্রুতিতে শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও স্থানীয়দের সহায়তায় জালশুকা কুমুদগঞ্জ জামে মসজিদের ভেতরে পাওয়া এক শপিং ব্যাগে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি ৯ এম এম পিস্তল এবং একটি পিস্তলের ম্যাগাজিন উদ্ধার করে সেনা সদস্যরা। অস্ত্র লুটের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।

নেত্রকোণা জেলার পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ ঢাকা পোস্টকে জানান, গতকাল মোট দুইটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। একটি সেনাবাহিনী যৌথ অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার হয়েছে এবং আরেকটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বধলা উপজেলার সোয়াই নদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়। সেখানে একটি অস্ত্রের অর্ধেক অংশ পাওয়া গেছে। বাকি অর্ধেক অংশ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

চয়ন দেবনাথ মুন্না/এফআরএস