পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতি, পৌর মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে জয়নুল হক নামে এক ধান-চাল ব্যবসায়ীকে মারধর ও জখম করেন একদল সন্ত্রাসী। ঘটনার আট মাস পর আটজনের নামে এবং ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে চাঁদাবাজি, হত্যাচেষ্টা, মারধরের অভিযোগে মামলা করেন ওই ব্যবসায়ী।

বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) রাতে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থানায় মামলাটি করা হয়।

গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর উপজেলার উপেন চৌকি ভাজিনি এলাকায় ব্যবসায়ী জয়নুল হক চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তার গোডাউন ভাঙচুর, মারধর লুটপাটসহ হত্যাচেষ্টা করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। প্রায় আট মাস পরে এসে এ ঘটনায় অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ী।

মামলার অভিযুক্তরা হলেন- দেবীগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধূরী, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, বর্তমান দেবীগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম। মামলার অপর নামীয় আসামিরা হচ্ছেন- মো. শফিক, মো. ইউসুফ আলী (৩৫), মো. আব্দুল মজিদ (৪৫), নূরে কায়দে আজম (৩৫) ও সাদ্দাম হোসেন। তারা দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

মামলার বাদী জানান, প্রতিদিনের মতো গত ২৮ ডিসেম্বর উপেন চৌকি ভাজিনি এলাকায় নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করছিলেন জয়নুল হক। সেদিন বিকেল ৩টার দিকে আবু বক্কর সিদ্দিক, গিয়াস উদ্দিন চৌধূরী ও আশরাফুল ইসলাম এমুর নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি সন্ত্রাসী কায়দায় তার কাছে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে প্রথমে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। একপর্যায়ে লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করে জখম করা হয় তাকে। পরে উপায় না পেয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন জয়নুল। কিন্তু পরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং আশ্রয় নেওয়া বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। এরপর এলাকাবাসী জয়নুলকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ভুক্তভোগী জয়নুল হক জানান, বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্তরা আমার সঙ্গে আপস মীমাংসা করতে চেয়েছিলেন। পরে আপস প্রক্রিয়া ব্যর্থ হওয়ার কারণেই মামলা করতে দেরি হয়েছে।

দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসকে দোয়েল/এফআরএস