চা পাতার ন্যায্য মূল্য প্রদান, কারখানায় পাতার ওজন কর্তন ও হয়রানি বন্ধসহ ৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পঞ্চগড়ের চা চাষিরা। এ সময় মহাসড়কে কাঁচা চা পাতা ফেলে নানা স্লোগান তুলে প্রতিবাদ করতে থাকেন তারা।

গত বৃহস্পতিবার জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে চা বাগান মালিক সমিতি ও সর্বস্তরের চা চাষীদের ব্যানারে তারা এসব দাবি করেন।

এতে অংশ নেন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা তিন শতাধিকের বেশি চা চাষি।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন চা চাষি আবুল বাশার বসুনিয়া, শাহিন আলম, আনিসুর রহমান আনিস, আতাউল্লাহসহ অনেকেই।

বক্তব্যে তারা বলেন, ইংরেজরা যেমন নীল চাষে দেশের চাষিদের রক্ত চুষে ছিল। তেমনি পঞ্চগড়ের চা-কারখানা মালিকসহ সিন্ডিকেট চক্রটি চা চাষিদের রক্ত চুষে খাচ্ছে। চাষীদের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। চা পাতার ওজন কর্তন করে দাম কম দিয়ে চাষীদের হয়রানি করা হচ্ছে। তৈরি চায়ের দাম বাজারে থাকলেও কাঁচা চা পাতা বিক্রির সময় চাষীরা ন্যায্য দাম পান না। অনলাইন নিলাম কেন্দ্র হয়েও চাষিরা কোনোভাবে উপকৃত হচ্ছেন না। অনেক চাষি আজ ঋণগ্রস্ত। ঋণের টাকায় চা বাগানের পরিচর্যা করছেন। কিন্তু কীটনাশকসহ শ্রমিক খরচে তারা তুলতে পারছেন না। অনেকে কারখানার মালিকদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে চাষিরা দাম না পেয়ে গাছ তুলে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ সমস্যা নিরসনে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি চা শিল্পকে বাঁচাতে ৮ দফা দাবি উল্লেখ করে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন চাষিরা।

৮ দফার দাবিগুলো হচ্ছে- ১. চাষি উৎপাদিত চা পাতার সর্বনিম্ন মূল্য ৪০ টাকা কেজি নির্ধারণ ও এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। ২. সব উপজেলায় একাধিক সরকারি চা প্রক্রিয়াজাত কারখানা স্থান করে সরকারিভাবে কৃষকের পাতা ক্রয় করতে হবে। ৩. তৈরি চা ও সব ধরনের আমদানি বন্ধ করে রপ্তানির জন্য যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ৪. বেসরকারি কারখানায় উৎপাদিত তৈরি চা নিলাম মূল্যে ৭০% পাতার দাম এবং ৩০% কারখানার প্রক্রিয়ার খরচ বাবদ নির্ধারণ করে আইন পাস করতে হবে। ৬. সমতলের ক্ষুদ্র চা বাগান কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় এনে ভর্তুকির মাধ্যমে চা চাষের প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি, উন্নত কীটনাশক, প্রয়োজনীয় সার, তেল, বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। ৬. চা পাতার সব কর্তন এবং সিন্ডিকেটকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে ৭.ক্ষুদ্র চা চাষির ক্ষতি হয় এরূপ সব আনি পরিবর্তন করতে হবে এবং ক্ষুদ্র চা চাষির মতামতের ভিত্তিতে সব নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। ৮. সমতলের চা চাষ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন করতে হবে। 

এ দাবিগুলো আগামী ৭ দিনের মধ্যে মানা না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চা চাষিরা।

এসকে দোয়েল/এমএ