কুমিল্লার দেবিদ্বারে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এক প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগে কুমিল্লার আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দেবিদ্বার উপজেলার বাঙ্গুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম বাদী হয়ে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হচ্ছেন– দেবিদ্বার উপজেলার বাঙ্গুরী গ্রামের আবদুল মান্নান ওরফে কামাল ড্রাইভার, আবু হানিফ সরকার মেম্বার, জাহাঙ্গীর আলম খান ও গুনাইঘর গ্রামের গিয়াস উদ্দিন।

বাদীর আইনজীবী মো. মনির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, অভিযুক্তরা বেশ কিছুদিন ধরে বাঙ্গুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষক মো. সেলিমকে অফিস থেকে বের করে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং পদত্যাগ করার হুমকি দেন। সর্বশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রধান শিক্ষক সেলিম বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে উপজেলার পদ্মকোট উত্তর পাড়া রাস্তার ওপর পৌঁছালে আসামিরা তাকে জোরপূর্বক সিএনজিতে উঠিয়ে প্রধান আসামি কামাল ড্রাইভারের বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় প্রধান শিক্ষক চিৎকার করলে তার মুখ চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পরে কামালের ঘরে নিয়ে ১০০ টাকার তিনটি অলিখিত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ও ২/৩টি সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলা হয়। ওই কাগজেই পদত্যাগপত্র লেখা হয়।

মামলার বাদী বলেন, স্বাক্ষর দিতে অস্বীকার করায় তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করে। এসময় তার কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল লুটে নেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, আসামিরা আমাকে এক ঘণ্টা আটকে রেখে বলে ‘স্বেচ্ছায় আপনাকে পদত্যাগ করতে বলেছিলাম, পদত্যাগ করেননি, তাই এখন স্বাক্ষর দেওয়া স্ট্যাম্প ও কাগজ দিয়ে পদত্যাগপত্র তৈরি করা হবে।’

প্রধান শিক্ষক সেলিম তার বিরুদ্ধে এলাকার কিছু ব্যক্তি ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে বলেন, এর আগে একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করেছে। তদন্তে তা প্রমাণ হয়নি। এবার সরকার পরিবর্তনের কারণে এ চক্রটি আবার সক্রিয় হয়ে পদত্যাগপত্রে জোরপূর্বক আমার স্বাক্ষর নিয়ে এখন প্রচারণা চালাচ্ছে আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি। আশা করি আদালত থেকে ন্যায়বিচার পাব।

বাদীর আইনজীবী মো. মনির হোসেন বলেন, জোরপূর্বক কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তা প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য শিল্প পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আরিফ আজগর/এসএসএইচ