রাজবাড়ীর পাংশায় স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে বৃদ্ধা আশালতা দাসকে (৭৫) হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার ঘটনায় প্রতিবেশী বিশ্বজিৎ বিশ্বাসকে (২৪) ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ী জেলা দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র দায়রা জজ মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন এই রায় দেন। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিশ্বজিৎ বিশ্বাস রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের প্রেমটিয়া গ্রামের সুজিত বিশ্বাসের ছেলে। তিনি পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। অপরদিকে নিহত আশালতা দাস ওই গ্রামের মৃত সন্তোষ দাসের স্ত্রী।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আশালতা দাসের স্বামী মারা যান ১১ বছর আগে। তার দুই মেয়ের অনেক আগেই বিয়ে হয়েছে। মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনি সবাই পাংশা শহরে থাকেন। গ্রামের বাড়িতে আশালতা দাস একাই বসবাস করতেন। পুরাতন বাড়িতে পুকুর, মাঠের জমি ছাড়াও বাগান ছিল তার। আশালতা দাসের দান করা জমির ওপর এলাকায় বিদ্যালয়, হাটবাজার হয়েছে। এসব দেখাশোনা করার জন্য লোকও ছিল। প্রতিদিনের ন্যায় চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি আশালতা দাস রাতের খাবার খেয়ে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ির কাজের লোক আশালতা দাসের মরদেহ ঘরের বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। ওই দিন নিহতের মেয়ের জামাই স্বপন কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে পাংশা থানায় ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় সুজিত বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালত সাক্ষ্যপ্রমাণ আদালত আজ এই রায় দেন।

রাজবাড়ী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আইনজীবী উজির আলী শেখ বলেন, আসামি বিশ্বজিৎ’র বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমি মনে করি এই দণ্ডাদেশের দ্বারা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সমাজের জন্য একটা মেসেজ যে অপরাধ করলে কেউ পার পায় না। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।

তবে সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিলের আবেদন করবেন বলে জানান আসামির পরিবারের সদস্যরা।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/রাজবাড়ী