ভারতীয় তরুণী প্রিয়াঙ্কা নস্করের সঙ্গে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের এক যুবকের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর ভারত থেকে অবৈধভাবে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে দালালের সহযোগিতায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করলে বিজিবি তাকে আটক করে।

আটকের পর তাকে ঝিনাইদহ জেলা আদালতে হাজির করলে অবৈধভাবে দেশে অনুপ্রবেশের দায়ে আদালত তাকে ২ বছরের সাজা প্রদান করেন।

দুই বছর কারাভোগ শেষে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টম্বর) দর্শনা সীমান্ত চেকপোস্টের শূন্যরেখায় বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে পরিবারের নিকট তরুণীকে হস্তান্তর করা হয়। প্রিয়াঙ্কা নস্কর ভারতের হাওড়া জেলার শ্যামপুর থানা গোপীনাথপুর গ্রামের প্রতাব নস্করের মেয়ে।

দুই দেশের পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেন- বিজিবির দর্শনা সীমান্ত আইসিপি ক্যাম্পের কমান্ডর সুবেদার মোস্তফা মিয়া, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমান, কাস্টমস ইন্সপেক্টর কাবিল সাদিক, দর্শনা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফাহিম হাসান ও ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের একটি দল।

ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- বিএসএফর গেদে ক্যাম্প কমান্ডার এসি তাপশসর, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ সঞ্জীব কুমার, কাস্টমস কর্মকর্তা আরপি জাদব, কৃষ্ণগঞ্জ থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) তন্ময় দাস ও এনজিও কর্মী চিত্তরঞ্জন রায় প্রমুখ।

প্রিয়াংকা নস্কর বলেন, বাংলাদেশে যে ছেলের কাছে আসতে গিয়ে ধরা পড়ে কারাগারে ছিলাম, সে কোনোদিন খোঁজ নেয়নি। তাকে ভুলে গেছি। জীবন থেকে দু’বছর ঝরে গেল। আমার মতো ভুল যেন কোনো মেয়ে না করে।

প্রিয়াংকার বাবা প্রতাব নস্কর ও মা তনুশ্রী নস্কর মেয়ে নিতে এসেছিলেন দর্শনা সীমান্তে। এ সময় মেয়েকে ফিরে পেয়ে বুকে নিয়ে হাউ-মাউ করে কেঁদে ওঠেন।

মা তনুশ্রী বলেন, দু’বছর মেয়েকে হারিয়ে কত কষ্টে ছিলাম। রাতে ঘুমোতে পারিনি। আমার মেয়ে ভুল করেছে।

প্রিয়াংকার বাবা প্রতাব নস্কর বলেন, ‘মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার পর কোনো খোঁজ পাইনি। ৮ মাস আগে বাংলাদেশ থেকে একজন মোবাইল করে জানায় মেয়ে ঝিনাইদহ কারাগারে আছে। দুটি বছর বাংলাদেশের কারাগারে আমার মেয়ে ভালো ছিল। আজ দু’দেশের সরকারের মাধ্যমে মেয়েকে ফিরে পেলাম। যারা আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিল আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’

পশ্চিমবঙ্গের এনজিও কর্মী চিত্তরঞ্জন বলেন, মেয়েটির বয়স অল্প। সে ভুল করেছে। এ রকম ভুল যেন কেউ না করে। এ জন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।

আফজালুল হক/আরকে