জয়পুরহাটে আরও এক মামলা, আসামি ১৯৫
জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট ও গুলি করে আহত করার অভিযোগ এনে ঘটনার ২৭ দিন পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক হুইপ ও জয়পুরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জয়পুরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুসহ ১৯৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জয়পুরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ূন কবির ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এর আগে শনিবার (৩১ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে এ মামলাটি করেন পাঁচবিবির মহীপুর হাজী মহসীন সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো: হোসাইন।
বিজ্ঞাপন
এ নিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে জেলায় চারটি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম দুটি মামলায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেতু ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আসামি করা হয়েছে। শিক্ষার্থী নজিবুল সরকার বিশাল হত্যা মামলায় ১২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। অটোচালক মেহেদী হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে ২১৭ জনকে। আর হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে আহত করার ঘটনায় শিক্ষার্থী রাকিব হোসেনের মামলায় ১১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এই মামলায় সাবেক দুই সংসদ সদস্য ছাড়া সদ্য অপসারণ হওয়া কয়েকজন মেয়র, অপসারণ হওয়া কয়েকজন উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন চেয়ারম্যান, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সামছুল আলম দুদু ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন রাজা, সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক রেজা, জয়পুরহাট পৌরসভার সদ্য অপসারণ হওয়া মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, সদ্য অপসারণ হওয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান মিঠু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম হাক্কানী, জাহিদুল আলম বেনু, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কুমার সাহা, জয়পুরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন, কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর, একই উপজেলার উদয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলী, জেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি মোরশেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর, পাঁচবিবি পৌরসভার সদ্য অপসারণ হওয়া মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সদ্য অপসারণ হওয়া চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন প্রমুখ।
আরও পড়ুন
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী হোসাইন যোগদান করেন। আন্দোলনের দিন দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ করে। আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও সামছুল আলম দুদুর নেতৃত্বে অন্য আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, পেট্রোল বোমা, ককটেল, পিস্তল, রামদা, ধারালো ছোরা, হাসুয়া, লাঠি, লোহার রড, হকিষ্টিকসহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এসময় পিস্তল দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়লে হোসাইন দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
জয়পুরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ূন কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষার্থী হোসাইন বাদী হয়ে ১৯৫ জনকে আসামি করে মামলা দিয়েছেন। মামলা এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।
চম্পক কুমার/এনএফ