লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের চার ভাইয়ের বিরুদ্ধে এক নারীকে মারধসহ নির্মাণসামগ্রী লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছেন তাদের প্রতিবেশী ও কলেজশিক্ষক এস তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাট দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হাসান অভিযোগের শুনানির পর এটিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দিয়েছেন।

ওসি ইমতিয়াজ কবির বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী অভিযোগটির বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মামলার আসামিরা হলেন- নুরুজ্জামান আহমেদের ভাই ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার শামসুজ্জামান আহমেদ (৫৫), কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ (৫৬), কালীগঞ্জের কেইউপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশিদুজ্জামান আহমেদ (৫৭) এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রংপুর বিভাগীয় সহকারী পরিচালক ওয়াহেদুজ্জামান আহমেদ (৫৩)। মামলায় আসামি হিসেবে তারাসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৪০-৫০ জনকে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৭ আগস্ট বিকেলে কালীগঞ্জের শ্রীখাতা মৌজায় তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তার জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ করছিলেন। এ সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা লাঠি, লোহার রড, ছোরা, হকিস্টিকসহ সেখানে গিয়ে নির্মাণ শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করতে হুমকি-ধমকি দেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সীমানাপ্রাচীর ভেঙে নির্মাণসামগ্রী লুটপাট করতে থাকলে মামলার বাদী তাবাসসুম রায়হান তাদের বাধা দেন। এ সময় হামলাকারীরা তার হাতে, পায়ে, পিঠে ও নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর লাঠি এবং লোহার রড দিয়ে মারধর করেন।

মামলার বাদী তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর বলেন, এ ঘটনায় আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। আইনজীবীর মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার লালমনিরহাটের আদালতে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। 

রোববার দুপুরে লালমনিরহাট দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক অভিযোগের শুনানির পর এটিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে কালীগঞ্জ থানার ওসিকে আদেশ দেন।

এ বিষয়ে কেইউপি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশিদুজ্জামান আহমেদ বলেন, আমার নামে কেন এই অভিযোগ দিয়েছে আমি আর জানা নেই। উনি যে অভিযোগ করেছেন সেই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আমার কখনোই ছিল না। তিনি ব্যক্তিগত আক্রোশ নিয়েই আমার নামে অভিযোগ করেছে। এটি কখনোই মেনে নেওয়ার মতো না। আইনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। তারা তদন্ত করে অবশ্যই সঠিক তথ্য উদঘটন করবেন।

কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, আদালত থেকে এখনো কোনো রকম আদেশ পাইনি। এই আদেশ পেলে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরকে